অপরাধ ও আদালত
0

গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা

গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে মামলাটি দায়ের করেন থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্সের ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন ও দুই ব্রিটিশ অ্যাটর্নি।

মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী এবং সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল (শুক্রবার) লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মামলার বাদী ব্যারিস্টার আশরাফুল আরেফিন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার সারাহ ফোরে ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু। সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই এবং আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ইতিহাসের এক পৈশাচিক নৃশংসতার সাক্ষী হয়েছিল।

আরো বলা হয়, চলতি বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ছাত্র আন্দোলনের সূচনা ঘটে, যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে পরিচিতি লাভ করে। শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার অযৌক্তিক হারে পুনর্বহাল এবং সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ পদ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। তাদের দাবি ছিল, এই কোটা ব্যবস্থা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অযাচিত অগ্রাধিকার প্রদান করে, যা দেশের মেধাবী এবং যোগ্য প্রার্থীদের জন্য চাকরির পথ রুদ্ধ করে দেয়।

আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোটা সংস্কার। তবে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর মতো ঘটনার পর এটি দ্রুত বৃহত্তর আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। শিক্ষার্থীরা তখন কেবল কোটা সংস্কার নয়, বরং প্রশাসনিক দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত হন।

এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার পর সরকার এর জবাব দেয় অমানবিক সহিংসতার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমন করতে সরকার পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের মতো বাহিনী মোতায়েন করে।

এই বাহিনী নির্বিচারে গুলি, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র- যেমন বার্ড শট প্লেট এবং তাজা গুলি ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালায়। ইতিহাসের এই বর্বরতম নৃশংসতায় ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের এই কঠোর ব্যবস্থার ফলে দেশে গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং অসংখ্য বিক্ষোভকারী নিখোঁজ হয়েছেন। এই নিষ্ঠুরতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের উদাহরণ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।

এএইচ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
১১ বছর পর শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হেফাজতে ইসলামের

সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে ৬২ সংস্কার প্রস্তাব বিএনপির

নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর গাজা-লেবাননে ইসরাইলের ব্যাপক হামলা

ইমরানের মুক্তির দাবিতে পাকিস্তানে রাজপথে লাখো বিক্ষোভকারী

শেখ হাসিনা এখন স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন: রুহুল কবির রিজভী

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইহুদি বিদ্বেষী: বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু

১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ছাত্র আন্দোলনে আহত পাঁচ ব্যক্তি পেলেন দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি রোবটিক হাত

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে সরকারি কোনো নির্দেশনা আসেনি: তৌফিক হাসান

হত্যা চেষ্টা মামলায় ব্যারিস্টার সুমনের দুইদিনের রিমান্ড

সজীব ওয়াজেদ জয় হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

শেখ হাসিনার প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকের ভূমিকা ধরে পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার