চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইনসগুলোতে যাত্রীদের আসন চাহিদা ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, এই অঞ্চলের এয়ারলাইনসগুলোর যাত্রীদের চাহিদার বিপরীতে আসন সক্ষমতা বছরওয়ারি হিসাবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। এক্ষেত্রে এয়ারলাইনসগুলোর লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮১ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় দশমিক ১ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে।
উল্লেখ্য, লোড ফ্যাক্টর হলো এমন একটি পরিমাপক, যার মাধ্যমে কোনো এয়ারলাইনসের কতগুলো আসন যাত্রী দিয়ে পূর্ণ তা বোঝায়।
২০২৩ এর তুলনায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এয়ারলাইনসগুলোর বাজার সব অঞ্চলেই বেড়েছে। তবে এ সময়ে এয়ারলাইনসগুলোর লোড ফ্যাক্টর ছিল বেশ মিশ্র প্রকৃতির। সবচেয়ে বেশি যাত্রী ছিল ইউরোপের প্লেনগুলোতে।
এ অঞ্চলের প্লেনগুলো বেশিরভাগই পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট ছেড়েছে। পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন এয়ারলাইনসের ফ্লাইটগুলোতে আগের তুলনায় যাত্রী বেশি ছিল এ বছর। তবে সে তুলনায় আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইটে কিছু খালি আসন নিয়েই যাত্রা করেছে।
অন্যদিকে এশিয়া-প্যাসিফিক এয়ারলাইনসগুলোতে যাত্রীদের জন্য আসন চাহিদা বছরওয়ারি হিসাবে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এয়ারলাইনসগুলোর আসন সক্ষমতা বছরওয়ারি হিসাবে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ।
ইউরোপীয় এয়ারলাইনসগুলোর যাত্রীদের জন্য আসন চাহিদা বছরে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। বছরওয়ারি হিসাবে আসন সক্ষমতা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
বছরে দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে উত্তর আমেরিকার এয়ারলাইনসগুলোতে যাত্রীদের জন্য আসন চাহিদা। এছাড়া বছরওয়ারি হিসাবে আসন সক্ষমতা ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
অন্যদিকে লাতিন আমেরিকার এয়ারলাইনসগুলোতে চাহিদা বেড়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে আসন সক্ষমতা বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এ সময়ে লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
আফ্রিকান এয়ারলাইনসগুলোতে যাত্রীদের জন্য আসন চাহিদা বছরে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে আসন সক্ষমতা বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। যেখানে লোড ফ্যাক্টর বেড়েছে ৭৬ শতাংশ।
কিলোমিটার প্রতি যাত্রী আয় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৭ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। মোট আসন সক্ষমতা বছরওয়ারি হিসাবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছর আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আসন চাহিদা বেড়েছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। এয়ারলাইনসগুলোর ক্যাপাসিটি বছরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে এবং লোড ফ্যাক্টর বেড়েছে ৮৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছর অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে আসন চাহিদা বেড়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এয়ারলাইনসগুলোর ক্যাপাসিটি বছরওয়ারি হিসাবে দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে এবং এ সময় লোড ফ্যাক্টর ছিল ৮৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
এয়ারলাইনসগুলোতে আসনের চাহিদা বাড়া শুধু যাত্রীদের জন্য নয়, বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও সুখবর। কারণ প্রতিটি ফ্লাইট আরো কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে সাহায্য করবে।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই সাফল্যের সঙ্গে বেশ চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। শিগগিরই কিছু অঞ্চলে ফ্লাইটের আসন সক্ষমতা নিয়ে সংকটে পড়তে হবে।
২০৫০ সালের মধ্যে নেট জিরো কার্বন নিঃসরণ অর্জন করতে কঠোর পরিশ্রম ও বিনিয়োগ করছে এয়ারলাইনসগুলো। তবে এক্ষেত্রে দেশগুলোর রাজনীতিবিদদের কাছ থেকেও সাহায্য প্রয়োজন।
প্রত্যেকের ফ্লাইটে আসন চাহিদা মেটাতে সরকারকে অবশ্যই বিমানবন্দর এবং এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিকে আরও উন্নত করতে হবে। —খালিজ টাইমস