হারিকেন কিংবা জলোচ্ছ্বাস নয়, ৫ নভেম্বরের অনিশ্চিত নির্বাচনী সংকট মোকাবিলায় এভাবেই কার্ডবোর্ড দিয়ে দোকান আড়াল করছেন মার্কিনরা। ওয়াশিংটনের এই চিত্রই বলে দেয়, কতটা রাজনৈতিক উত্তাপ বইছে যুক্তরাষ্ট্রে।
মার্কিনদের আগাম সতর্কতার আরেক কারণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীর কারচুপির শঙ্কা প্রকাশ। উইসকনসিনে প্রচার সভায়, কাউকে ভোট জালিয়াতি করতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই অভিযোগ জানাতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান ট্রাম্প।
রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সবাইকে ভোট দিতে নিয়ে আসুন। আপনারা কখন ভোট দিচ্ছেন সেটি বিষয় না। মূল বিষয় ভোট দিচ্ছেন কী না। কাউকে কারচুপি করতে দেখলে কী করবেন সেটি জানা আছে? সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ দায়ের করুন।’
এর আগে কামালাকে সমর্থন দেয়ায় ট্রাম্পের তুলোধুনোর শিকার হন বুশ প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনি। মিশিগানে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করেছেন লিজের বাবা। তাই মার্কিন মুসলিম ও আরব ভোটাররা সমর্থন দিবেন না কামালাকে।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তারা আরব আমেরিকান ও মুসলিমদের ভোট চায়। আবার কামালা লিজ চেনিকে পছন্দ করেন। তার বাবাই মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করেছেন। আমার মনে হয়না, ওদের এই কৌশল কাজে দিবে। লিজ সবসময় যুদ্ধ চায়।’
ট্রাম্প যেখানে অভিযোগ, কটাক্ষ ও বিভেদ তৈরিতে ব্যস্ত, উল্টোদিকে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরিতে ভোটারদের মন কাড়ার প্রয়াসে কামালা। উইনকনসিনে নির্বাচনী সভায় কামালা অঙ্গীকার করেন, জয়ী হলে কর ছাড়ের বিশেষ সুবিধা দিবেন ১০ কোটি মধ্যবিত্ত মার্কিনকে। কমিয়ে আনবেন জীবন যাত্রার ব্যয়।
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘আমার প্রধান লক্ষ্য জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনা। প্রেসিডেন্ট হলে প্রতিদিন এ লক্ষ্যে আমি কাজ করে যাবো। ১০ কোটি মধ্যবিত্তকে বিশেষ কর ছাড় সুবিধা দিবো। অসদুপায়ে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি রোধে ফেডারেল আইন প্রণয়ন করবো। কঠোর পরিশ্রমী মার্কিনদের জন্য কাজ করে যাবো।’
এর আগে একই অঙ্গরাজ্যের এক শ্রমিক সভায় কামালা জানান, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ শিল্পখাতগুলোয় বিনিয়োগে কাজ করবে তার সরকার। এসময় ট্রাম্পের মতো অভিযোগের রাজনীতিরও আশ্রয় নেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী।
কামালা হ্যারিস বলেন, ‘ট্রাম্পের দাবি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পখাতকে চাঙ্গা করবেন। উল্টো তার সময়ই যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখের বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এই উইসকনসিনেই হাজারো মানুষ বেকার হয়েছেন। শিল্পখাতের সবচেয়ে বড় ব্যর্থ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
এনবিসি নিউজের প্রতিবেদন বলছে, এরইমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন সাড়ে ৬ কোটির বেশি মার্কিন। ভোটারদের মধ্যে ৪১ শতাংশ ডেমোক্র্যাট, ১ শতাংশ পিছিয়ে রিপাবলিকানরা। দেশজুড়ে আগাম ভোটগ্রহণে ব্যালটে মত দিয়েছেন ৫৪ শতাংশ নারী। পুরুষের সংখ্যা ৪৪ শতাংশ।