খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে আমরা যাতে অতি দ্রুত ওনাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘এর অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টে ওভারের পর যে দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টার আছে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি, সব কাজগুলো সম্পন্ন করেই অতিদ্রুতই ম্যাডামকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারব।’
এখন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। ম্যাডাম গুলশানের বাসায় আগের মতোই মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে আছেন। বলতে পারেন ওনার অবস্থা স্থিতিশীল।’
তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরই মধ্যে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও তার কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কারণ ম্যাডামের সাথে চিকিৎসক-নার্সসহ আত্মীয়-স্বজন যারা যাবেন তা জানানো হয়েছে।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র দুই-একটি সেন্টারে রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আরথ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে সর্বশেষ ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়াকে এমন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে নেওয়া হবে, সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
বর্তমান শর্ট ডিসটেন্সে চার ঘণ্টায় যাওয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে যার মাধ্যমে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে রোগী নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লন্ডন যেতে ১৪ ঘণ্টার লং ডিসটেন্স এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পৃথিবীর কয়েকটি দেশে রয়েছে। সেসব দেশের সাথে চিকিৎসকরা আলোচনাও করেছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই টিমে দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী কার্ডিওলজিস্ট ডা. জোবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন চিকিৎসকও রয়েছেন বলে জানা গেছে।