চুপ করে বসে নেই ইরান সমর্থিত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। ইসরাইলি সেনাদের উত্তর ঘাঁটিতে চলছে রকেট হামলা। এছাড়া, পূর্ব সীমান্তে হিজবুল্লাহ'র হামলায় দুই ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আইডিএফ।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার মধ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানাচ্ছে, ইরানের পরমাণু স্থাপনার ওপর ইরসাইল হামলা করবে না বাইডেন প্রশাসনকে এমন কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা। ফলে মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত যে কোনো মুহূর্তে সর্বাত্মক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে। তবে হোয়াইট হাউজের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুর জায়গায় থাকলে ইরানের তেল স্থাপনায় হামলার বিকল্প ভাবতেন। এছাড়া, লেবাননে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে ১৫৭ মিলিয়ন বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘ইসরাইল তাদের পরবর্তী হামলার পরিকল্পনা নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানায়নি। আলোচনা চলছে। তবে আমি নেতানিয়াহুর জায়গায় থাকলে, ইরানের তেল স্থাপনাগুলোতে হামলার পরিবর্তে বিকল্প সমাধান খুঁজতাম।’
গেল এক সপ্তাহে লেবানন-ইসরাইল সংঘাতে নড়েচড়ে বসেছে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও রেড ক্রিসেন্টের মতো সংস্থা। ইসরাইলি অভিযানে লেবাননে দেড় শতাধিক শিশু ও আড়াইশ'র বেশি নারী নিহত হওয়ায় ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র বলেন, ইসরাইলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বৈরুতের আবাসিক ইসরাইলি বিমান হামলায় হতাহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরাও আহত হচ্ছেন। লেবাননে ইসরাইলের অবিরাম হামলা ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
আকাশ ও সড়ক পথে ইসরাইলি হামলার আশঙ্কা থাকায় চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন লেবাননে অবস্থানরত প্রবাসীরাও। এরইমধ্যে, নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে কলোম্বিয়া, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও গ্রীস। নেদারল্যান্ডের বিমানবন্দরে পৌঁছে পরিবারের সাথে মিলিত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন অনেকে।
বিমানবন্দরে একজন বলেন, ‘আমার স্বামী লেবাননে আটকা পড়েছিলেন। কিন্তু কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কয়েক দফায় টিকেট কেটে বিমানবন্দরে এসে দেখেছেন ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এরপর আমাদের দেশের সরকার সরাসরি উদ্যোগ নেন। আমরা কৃতজ্ঞ।’
ইসরাইলি অভিযান অব্যাহত আছে ফিলিস্তিনের গাজা ও অধিকৃত পশ্চিমতীরে। শুক্রবার ওয়েস্ট ব্যাংকের তুলক্রাম শহরে শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে হামাসের একজন কমান্ডার ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে সশস্ত্র সংগঠনটি।
অন্যদিকে, ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুতিদের বিরুদ্ধে চড়াও হয়েছে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাজধানী সানার হোদেইদাহ বিমান বন্দরসহ হুথি নিয়ন্ত্রিত বেশি কিছু এলাকায় হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও বিমানবাহিনী। সশস্ত্র সংগঠনটির ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সফল হামলার দাবি ওয়াশিংটনের। হুতি নিয়ন্ত্রিত প্রধান টেলিভিশন চ্যানেল আল মাসিরার দাবি, হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথভাবে অংশ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। যদিও, হুতিদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ব্রিটেনের স্টারমার প্রশাসন।