'রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য' ক্রীড়াঙ্গনে কথাটা বহুল প্রচলিত। আর ক্রীড়াঙ্গনের সেই মাধ্যমটা যদি হয় ক্রিকেট তাহলেতো কথাই নেই। কিন্তু ব্যতিক্রম বলেওতো একটা কিছু আছে। সময় আর ম্যাচের হিসেবে গত দেড়শ' বছরে অনুষ্ঠিত হওয়া আড়াই হাজারের বেশি টেস্টে এমন কিছু রেকর্ড আছে যেগুলো ভাঙা প্রায় অসম্ভব।
লাল বলের ক্রিকেটে সবমিলিয়ে কয়েকজন বোলার সম্মিলিতভাবে যেখানে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নিতে হিমশিম খায় সেখানে ইংল্যান্ডের জিম লেকার প্রায় অসম্ভব এক গল্পের উপাখ্যান। ১৯৫৬ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ৯০ রান খরচায় শিকার করেছিলেন ১৯ উইকেট। এরপর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে আরও ৬৮ বছর পার হলেও জিম লেকারের রেকর্ড এখনও অক্ষুণ্ন রয়েছে।
ক্রিকেট ঈশ্বর খ্যাত শচীনের গড়া অনেক রেকর্ডই হয়ত ভাঙার দ্বারপ্রান্তে তবে সাদা পোশাকে ২০০ টেস্ট ম্যাচ খেলার রেকর্ড সম্ভবত সবার ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে। কারণ এখনও খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে ৩৩ বছর বয়সী জো রুট খেলেছেন সর্বাধিক ১৪৬টি টেস্ট। শচীনের রেকর্ড যেনো সব মাথা ছাড়িয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে।
টেস্টে ৮০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লঙ্কাকাণ্ড লিখেছিলেন শ্রীলঙ্কান অফ স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রেকর্ডটা উইলফ্রেড রোডসের। উইকেট শিকারের সংখ্যাটা রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার মত। এক হাজার ১১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে এই ইংলিশম্যান শিকার করেছেন চার হাজার ২০৪ উইকেট। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের যুগে যে রেকর্ড ভাঙা প্রায় দুঃসাধ্য ব্যাপার।
রেকর্ডের গল্প হবে আর সেখানে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান থাকবে না থাকাটা দুর্লভ বিষয়। ৯৯.৯৪ এর অবিশ্বাস্য গড় নিয়ে মাত্র ৫২ টেস্ট ম্যাচে ৬ হাজার ৯৯৬ রান করেছেন সাবেক এই অজি ক্রিকেটার। এমন ঐশ্বরিক গড় বর্তমান ক্রিকেটারদের জন্য যেনো শুধুই কল্পনা।
একুশ দশকে খেলেছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ার শচীর রমেশ টেন্ডুলকারের। তবে ক্রিকেট মাঠের বহু রেকর্ডে সবার প্রথমে নাম থাকলেও দুই যুগের ক্যারিয়ারেও শচীন টপকাতে পারেননি উইলফ্রেড রোডসকে। ১৮৯৯ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষিক্ত হওয়ার পর ১৯৩০ সাল পর্যন্ত তিন দশকের লম্বা ক্যারিয়ার তার। এমনকি ৫৪ বছর বয়সে সবশেষ ম্যাচ খেলা এই ইংলিশ ইতিহাসেরই সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার।