অপরাধ ও আদালত
দেশে এখন
0

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের শিকার ১১ পরিবারের অভিযোগ

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে তাদের স্বজনরা গুম হয়েছেন দাবি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছে ১১টি পরিবার। গুমের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চান তারা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, গুমের সব অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়নি। ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইনে গুমের বিচার করা হবে।

শরতের সকালে টানা বৃষ্টি রাজধানী জুড়ে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জড়ো হয়েছেন একদল নারী পুরুষ। তারা এসেছেন নিখোঁজ হওয়া স্বজনদের ফিরে পেতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর যারা এসব গুমের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার চাইতে।

কারো স্বামী, কারো ভাই, কারো বাবা দীর্ঘদিন যাবৎ নিখোঁজ। স্বজনদের দাবি, তাদের সাদা পোশাকে র‌্যাব কিংবা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়েছে।

স্বজনদের মধ্যে একজন জানান, বাবার ছবি আর ভিডাও দেখেই বড় হয়েছি। বাস্তবে কখোনো দেখি নাই। আমি চাই আমার বাবা মুক্তি পাক।

কিছু সাদা পোশাকধারী লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেও জানান স্বজনদের মধ্যে একজন।

ছয়মাসের বেশি সময় গুম থেকে ফিরে আসা আইনজীবী সোহেল রানা, গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ র‌্যাব পুলিশের বিচার চান। আর গুম পরিবারের সমন্বয়ক বেলাল হোসেন বলেন, সব গুমের সঙ্গে জড়িত র‌্যাব। গুম বিষয়ে তদন্ত কমিশনের কাজে অসন্তুষ্টির কথা জানান তিনি।

গুম হওয়া ব্যক্তি ও আইনজীবী সোহেল রানা বলেন, ' আয়নাঘর গুলোকে যে উন্মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। অন্তত ওই পরিবারগুলো স্বান্তনা পাবে যে হয়তো এখানে থাকতে পারে। আয়নাঘর তো একটা প্রতিশব্দ। এগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রত্যেকটি আয়নাঘর যদি উন্মুক্ত করা হতো তাহলে প্রতিটি পরিবার স্বান্তনা পেতো।'

গুম পরিবারের সমন্বয়ক বেলাল হোসেন বলেন, 'কমিশনে যেয়ে তাদের কাছে কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয় না। আমরা অনেক নিরাশ হয়ে গেছি। আজকে আমরা বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ জনের মতো লোক গুম, খুন অবস্থায় আছেন। যাদেরকে এখনো জীবিত বা মৃত অবস্থায় আছে এখনো উদ্ধার করা হয় নাই। ৭০-৮০ টা নামে আয়নাঘর নামে আছে কিন্তু একটা আয়নাঘর ও উম্মোচন করা হয় নাই।'

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর জানান, গুমের সব অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়নি ৷ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইনে গুমের বিচার করা হবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রধান প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, '১১ টি পরিবারের ঘটনা আমরা বললাম। দুইজন মানুষ ফেরত আসতে পেরেছে। আর বাকি দশজন ফেরত আসতে পারেননি। অপরাধ গুলো সংঘটিত হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে অভিযোগ আমরা পেয়েছি যেগুলো গুমের ঘটনা হয়েছে। জোরপূর্বক আটকে রাখা এমন যে সমস্ত অপরাধ হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জুরিস ডিকশন আছে কিন্তু সেগুলো বিচারের জন্য যথার্থক হবে কিনা সেটা পর্যালোচনার পরেই বলা যাবে।'

এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৪০টির বেশি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে এগুলো মামলা আকারে নেয়া হবে।