এক বছর পর আবারো বিশ্বনেতাদের পদচারণায় মুখর জাতিসংঘের সদরদপ্তর। ৭৯তম বার্ষিক সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ১৩০টিরও বেশি দেশের সরকার প্রধান।
অনেকের জন্য প্রথম হলেও শেষবারের মতো এবারের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন জো বাইডেন। বিদায়ী বক্তৃতায় বিশ্বজুড়ে চলা যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গাজা ইসরাইলের ১১ মাসব্যাপী যুদ্ধের পক্ষে সাফাই গাইলেও জানান, ফিলিস্তিনিদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিকল্প নেই। মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'সময় হয়েছে যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে নেয়ার। জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে নেয়ার এবং ইসরাইল ও গাজাকে হামাসের হাত থেকে মুক্ত করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। গাজার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘব করে যুদ্ধের ইতি টানার সময় এসেছে'।
ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জো বাইডেন। জানান, কিয়েভকে সমর্থন দেয়া থেকে পিছিয়ে আসবে না ওয়াশিংটন।
জো বাইডেন আরো বলেন, 'যুদ্ধে পুতিন তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি ইউক্রেনকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইউক্রেন এখনো মুক্ত। তিনি ন্যাটো দুর্বল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ন্যাটো এখন আগের চেয়ে বড় ও শক্তিশালী। এমনকি সুইডেন ও ফিনল্যান্ড নতুন দুই সদস্যও যুক্ত হয়েছে'।
এর আগে সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বলেন বিশ্বজুড়ে সরকারগুলোর দায় এড়ানোর মানসিকতার কারণে বাড়ছে বৈষম্য ও অনিশ্চয়তা। এতে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আফ্রিকায়। গাজার মতো লেবাননেও আরেকটি যুদ্ধের বোঝা বিশ্ববাসী বইতে পারবে না বলেও সতর্ক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, 'গাজায় প্রতিটি দিন এখন দুঃস্বপ্নের মতো। পুরো অঞ্চলই যুদ্ধের হুমকির সম্মুখীন। লেবাননের দিকেই দেখুন। উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত। লেবানন এখন খাদের কিনারায়'।
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রথম দিন বক্তৃতা দেন তুর্কিয়ের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান। ৭৯তম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের পর্দা নামবে ৩০ সেপ্টেম্বর।