তিনি বলেন, ‘অপরাধী বাঙালি-উপজাতি, হিন্দু-মুসলমান যেই হোক না কেন, তাকেই ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশের নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব। সেটা যেন কোনো অবস্থাতেই অগ্রাধিকারের বাইরে চলে না যায়, সেই ব্যাপারে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সতর্ক করছি।’
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘এবি পার্টি মনে করে, আদিবাসী-সেটলার শব্দচয়ন মোটেই যৌক্তিক না; ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান বা নৃবিজ্ঞান কোনোটাই এ ধরনের সম্পর্ক সমর্থন করে না। আমরা সকলকে বাঙালিদের মিছিলে গুলি, মধ্যরাতে ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদে পিটিয়ে হত্যা, পরবর্তীতে দাঙ্গা ও চাকমা সম্প্রদায়ের তিনজন সহ সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করতে হবে।’
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান ও মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন।
এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব বলেন, ‘পাহাড়ে স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় পূর্বের সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকারের উচিত হচ্ছে এর রাজনৈতিক সমাধানের জন্য সকল পক্ষকে কমিউনিটি লেভেলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংহতি ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার যে নীতিগত প্রয়োজন আছে তা পূরণ করা।’
তিনি বলেন, ‘নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় তাদের প্রতি সংবেদনশীলতা বজায় রেখে একই সাথে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো অবস্থায়ই কারো মানবাধিকার রক্ষার ঘাটতি না হয়।’
বিদেশি ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে যেমন সতর্ক থাকতে হবে তেমনি নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নিশ্চিত করার মধ্যে দিয়ে, বিশ্বব্যাপি যে-সকল গ্রহণযোগ্য কনভেনশন আছে, তার আলোকেই কাজ করতে হবে বলে মনে করে এবি পার্টি।
সম্মেলনে পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানের জন্য ন্যায় কমিশন গঠনের প্রস্তাব করছে এবি পার্টি এবং একই সাথে জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ সংরক্ষণ করা, যার সাথে কোন আপস করা যাবে না। এছাড়াও দ্রুততম সময়ে গঠিত ‘ন্যায় কমিশন’ সকল পার্বত্য চট্টগ্রামবাসী যে নিপীড়নের শিকার হয়েছে, রাষ্ট্রীয় বা বেসামরিক ব্যক্তি বা সংস্থা দ্বারা, তার সত্য অনুসন্ধান ও উদ্ঘাটন করবে বলেও জানানো হয়।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মেজর মিনার বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা নিয়ে সরকারগুলো কখনো আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাননি। আমি তিন বছর পার্বত্য অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেছি, তাদের যাপিত জীবন আমরা জানি। বাঙালির সমস্যা গুলোও সবাই জানে।’
তিনি বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের কোনো সরকার পাহাড়ের বাসিন্দাদের নিয়ে আন্তরিক ভূমিকা রাখেননি। আমরা আশাকরি নতুন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাহাড়ের সমস্যাকে আন্তরিকতার সাথে দেখবেন এবং সমস্যা সমাধানে আমাদের সুপারিশগুলো বিবেচনায় নিবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, গাজী নাসির, আহমেদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, যুবপার্টি মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, রুনা হোসাইন, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা আহ্বায়ক সিএমএইচ আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।