সভায় জানানো হয়, তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি।
বাংলাদেশে তামাক কর কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ এবং তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য। ফলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হচ্ছে, তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এর ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের আওতায় ২০২৪ সালে প্রকাশিত টোব্যাকোনমিকস সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ডেও বাংলাদেশের হতাশাজনক চিত্র উঠে এসেছে।
দাম, সহজলভ্যতা, করকাঠামো এবং খুচরা মূল্যে করের অংশ এই চারটি বিষয় বা ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ড তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ৫ এর মধ্যে মাত্র ১.১৩, যা আগে ছিল ২.৩৮। ৪টি ফ্যাক্টরেই খারাপ করেছে বাংলাদেশ। তবে সহজলভ্যতায় শূন্য পাওয়ার কারণেই এবারে স্কোর অর্ধেকে নেমে এসেছে।
মূল্যস্ফীতি এবং আয় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে সবধরনের সিগারেটের দাম বৃদ্ধি, নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক খুচরা মূল্যের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ করা এবং সিগারেটে বহুস্তর বিশিষ্ট আ্যডভ্যালোরেম কর পদ্ধতির পরিবর্তে ইউনিফর্ম স্পেসিফিক বা মিক্সড (স্পেসিফিক ও আ্যডভ্যালোরেম) কর পদ্ধতি প্রচলনের মাধ্যমে সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ডে বাংলাদেশের উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে বলে আলোচনায় জানানো হয়।
আত্মা’র সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করাসহ বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সভায় ৫৩ জন সদস্যের উপস্থিতিতে সংগঠনের কার্যক্রম এবং করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন আত্মা’র কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র হাসান শাহরিয়ার।
বিশেষ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান এবং বাংলাভিশনের সিনিয়র নিউজ এডিটর সালমা ইয়াসমিন রিতা, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)- বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আত্মা’র কনভেনর মতুর্জা হায়দার লিটন, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ এবং সদস্যসচিব এবিএম জুবায়ের প্রমুখ।