রাশিয়ায় ইউক্রেনের দখল করা কুরস্কে সীমান্তবর্তী অন্তত দু'টি এলাকার নিয়ন্ত্রণ সোমবার পুনরুদ্ধার করেছে মস্কো। একে গেলো ক'দিনে ইউক্রেনের সেনাদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গেলো ৬ আগস্ট থেকে কিয়েভের আকস্মিক আগ্রাসনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বহিঃশক্তির আক্রমণ হয় রুশ ভূখণ্ডে, তখন থেকেই কুরস্কে চলছে তীব্র লড়াই। গেলো সপ্তাহে অঞ্চলটির ১০টি বসতি পুনরুদ্ধার করে রুশ বাহিনী। যদিও কুরস্কের প্রায় ১শ' গ্রামের ১৩শ' বর্গকিলোমিটার এলাকা এখনও দখল করে রেখেছে ইউক্রেন। পরিকল্পনা অনুযায়ীই যুদ্ধে এগোচ্ছে দেশটি, জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'নতুন করে প্রায় ১শ' গ্রামে সংঘাতের সূচনা হয়েছে। বিশেষ করে কুরাখোভে ও পোকরোভস্কের দিকে তীব্র সংঘাত চলছে। আমরা নিজেদের অবস্থান সুরক্ষিত রাখতে লড়াই করছি। আমাদের কুরস্ক অভিযান সেভাবেই এগোচ্ছে, যেভাবে আমরা পরিকল্পনা করেছি।'
ইউক্রেনের পূর্বে দোনেৎস্ক অঞ্চল পুরোটা দখলের লক্ষ্যে এক ধাপ এগোনোর চেষ্টায় কুরাখোভে ও পোকরোভস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে মস্কো। ইউক্রেনে বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলার পাশাপাশি দেশটির একটি যুদ্ধবিমানও ভূপাতিত করেছে রুশ সেনারা। যদিও কিয়েভের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় রুশ আগ্রাসন আটকে দিয়েছে ইউক্রেনের সেনারা।
এমন পাল্টাপাল্টি দাবির মধ্যেই যুদ্ধ জয়ে আবারও সেনাবাহিনীতে সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পৌনে তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সেনা বাড়াচ্ছে ক্রেমলিন, যা কার্যকর হবে পহেলা ডিসেম্বর।
ডিক্রিতে বলা হয়, এ পর্যায়ে সেনাবহরে যোগ হবে আরও এক লাখ ৮০ হাজার সেনা। ফলে সবমিলিয়ে সেনা সংখ্যায় চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ সশস্ত্র বাহিনী গড়ার পথে রাশিয়া। যদিও পুতিনের এ ঘোষণার আগেই অনেক রুশ নাগরিক স্বেচ্ছায় মাতৃভূমি রক্ষার লড়াইয়ে নাম লিখিয়েছে বলে দাবি রুশ সেনাবাহিনীর।
রাশিয়া সার্জেন্ট সেনা নিয়োগ কর্মকর্তা কিরিল পাখোমোভ বলেন, 'কুরস্ক অঞ্চলে যা ঘটলো, তারপর থেকে স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাচ্ছে অনেক মানুষ। যেভাবে নাম লেখাচ্ছে তারা বাহিনীতে, অতীতে কখনোই তা ঘটেনি। দিনে দিনে এ সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ মাতৃভূমির জন্য লড়তে ইচ্ছুক ও প্রস্তুত। তাদের উৎসাহ বাড়ছে।'
ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ডিক্রিতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী সদস্যসংখ্যা সবমিলিয়ে বাড়িয়ে ২৩ লাখ ৮০ কোটিতে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। এদের মধ্যে সক্রিয় সেনাসদস্য থাকবে ১৫ লাখ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এর আগে দুই দফায় তিন লাখের বেশি নতুন সেনা নেয় রাশিয়া।
এছাড়াও বেসামরিক নাগরিকদের মধ্য থেকেও তিন লাখের বেশি যোদ্ধা সমাবেশ করে ক্রেমলিন, যার ফলে সে সময় দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল যুদ্ধে অনিচ্ছুক লাখো পুরুষ।