হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে, বারান্দায় এমনকি বাগানের গাছতলায় শুয়ে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। তাদের স্বজনদের মধ্যে একজন অভিযোগ করেন, 'নার্সের কাছে আসছিলাম সকালে ইনজেকশন দিতে। উনাদের কাছেও খারাপ ব্যবহার পাচ্ছি। আর বেড না থাকায় গাছের তলায় রোদের মধ্যে থাকতে হবে।'
গাছের মধ্যে স্যালাইন বেঁধে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। এ পর্যন্ত বড় ডাক্তারের দেখা পায় নাই বলেও জানান একজন রোগী।
মাত্র ১৮ শয্যার ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন ১৭৬ জন রোগী। তাদের বেশিরভাগই নবজাতক থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এত রোগির চাপে বিপর্যস্ত অবস্থা হাসপাতালে।
আরও একজন রোগী জানান, 'প্রথম দিন যা চিকিৎসা এখনও সেটা চলছে । কিন্তু বড় ডাক্তার দেখাতে পারি নাই।'
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি ডায়লাইসিস, স্কেনো ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি সেবা। টেকনিশিয়ান এর অভাবে এসব সেবা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে নেই মেডিসিন, চর্ম-যৌন, সার্জারি, অর্থোপেডিক্স ও সার্জারি, রেডিওলোজিস্ট চিকিৎসক।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাজমুল হাসান শাম্মী বলেন, '১২৭ জনের মতো ভর্তি আছে শিশু ওয়ার্ডে। কিন্তু আমরা মাত্র ১৮ জনকে বেডে সাপোর্ট দিতে পারছি। বাকি যে প্রায় ১০৯ জনের মতো রোগী আছে তাদেরকে নিচে বেডে অথবা বাইরে সব চিকিৎসার সাপোর্ট দিচ্ছি। যার ফলে তারাও সন্তুষ্ট না, আমরাও সন্তুষ্টু না।'
সিনিয়র স্টাফ নার্স সুলতা রানী বসাক বলেন, 'এইখানে আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। কারণ ২৬ জন এর জায়গায় ৯০ জনকে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।'
জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, বমি, আমাশয়, টায়ফয়েডের সাথে হাসপাতালে বাড়ছে সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘন্টায় ২৫০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছে ৫৭০ জন। জরুরি বিভাগেও সেবা নিচ্ছেন হাজার খানেক রোগী।
ভর্তি হওয়া রোগিদের মধ্যে শুধু ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৬০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি।