স্বাধীনতার পর থেকেই সংশোধনের নামে বারবার কাটাছেড়া হয়েছে বাংলাদেশের সংবিধান। তবুও ফেরেনি গণতন্ত্র, বরং নানা সংশোধনীর মাধ্যমে চেপে বসেছে কর্তৃত্ববাদী শাসন।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অবসান হয়েছে দীর্ঘদিনের শিকল পড়া যুগের। পালাবদলের ইতিহাসে সে যুগ যেন আর না ফেরে সেজন্য এখন আলোচনায় উঠে আসছে দেশ পুনর্গঠনের জন্য জনগণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের।
রাজধানীর বিআইআইএসএস মিলনায়তনে গভর্ন্যান্স স্টাডিজ-সিজিএসের গণতন্ত্র পুনর্গঠনের জন্য সংলাপে বক্তারা বলেন, বর্তমান সংবিধান শেখ হাসিনার সংশোধিত একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলার সহায়ক। ফলে কিছু ধারা সংশোধন করলেও এর থেকে পরিত্রাণ অসম্ভব। তাই, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বাহাত্তরের শক্তি ফেরাতে গণপরিষদ গঠনের দাবি আলোচকদের।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজুল আলম বলেন, ‘জনগণের বৃহত্তর অংশ কি চাচ্ছে সেটা গুরুত্ব দিতে হবে। যে ত্যাগের মাধ্যমে বর্তমান দেশ অর্জন সংবিধানে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। ৭১ এর আকাঙ্ক্ষা বাদ দেয়া হলে সংবিধান পুনর্লিখন আত্মঘাতী হবে।’
পুনর্লিখন কিংবা পরিমার্জন, যেকোনোটিতেই মাথায় রাখতে হবে অসংশোধনযোগ্য এক তৃতীয়াংশ বিধান। তবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফেরাতে ও গণতন্ত্র রক্ষায় সংবিধান সংশোধনের বিকল্প দেখছেন না বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ও সিজিএসের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. আলী রীয়াজ বলেন, 'ঐক্যমতের জায়গাকে আমি গণতন্ত্র মনে করি না। সহনশীলভাবে মতপ্রকাশ এবং মত প্রকাশে সংখ্যালঘুর নিশ্চয়তা বিধানই হচ্ছে গণতন্ত্র। আমাদের সেই গণতন্ত্র পুনর্গঠন করতে হবে। তাই সংবিধানে হাত দেয়া ছাড়া আমি আর কোনো পথ দেখতে পাচ্ছি না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘স্বাধীনতা ফেরাতে ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের ছাত্র-জনতার কাছেই ফিরে যেতে হবে।’
নতুন সংবিধান রচনা বা সংশোধন, যাই হোক জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের সব স্তরের জনগণকে সুযোগ দেয়ার দাবি দেশের গণতন্ত্রকামীদের।