দেশে এখন
0

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করতে থানায় ১২ ঘণ্টা অপেক্ষা নিহতের মা'র

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আলোকচিত্রী তাহির জামান প্রিয় নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। তবে, মামলা করতে নিহতের মাকে থানায় অপেক্ষা করতে হয়েছে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময়। নানা অজুহাতে মামলা না নেয়ার চেষ্টা হলেও মধ্যরাতে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে কতশত প্রাণ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তার সঠিক হিসেব অনেকটাই অজানা। ১৯ জুলাই আলোকচিত্রী তাহির জামান প্রিয় রাজধানীর গ্রিন রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি একসময় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের ভিডিও জার্নালিস্ট ছিলেন।

মামলার সাক্ষী বলেন, 'আমার কাছে ভিডিও ফুটেজ ছিল, কমলা রঙের জামা পড়া ছিল। এরপর আমি আশেপাশের মানুষের সাথে কথা বলতে শুরু করি যে কে মারা গেলো, তখন কথা বলতে বলতে আমি জানতে পারি যে এটা প্রিয় নামের একজন।'

ছেলে হত্যার মামলা দায়েরের জন্য মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিউমার্কেট থানায় আসেন সামসি আরা জামান। সেখানে ১২ ঘণ্টা পার হলেও মামলা না নেয়ার নানা অজুহাত দেখান দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা। এদিকে থানায় নিহতের মায়ের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতা। একসময় রাত সোয়া দশটার দিকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ইসরাইল হাওলাদার এসে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'প্রিয়'র লাশ পোস্ট-মোর্টেম করে বাড়িতে পৌঁছাতে লেগেছে ৪৮ ঘণ্টা। এখন এই মামলা নিতেও সময় লাগলো আসলে পুরো একদিনের মতো।'

এরপর রাত ১২টার পর ডিএমপির যুগ্ম কমিশনারের তত্ত্বাবধানে দায়িত্বরত কর্মকতা মামলার আবেদন গ্রহণ করেন। এতে আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক আইজিপি, রমনা জোনের সাবেক ডিসি-এডিসি, নিউমার্কেট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলামসহ অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জন পুলিশ, বিজিবি সদস্য ও কর্মকর্তাকে।

ইসরাইল হাওলাদার বলেন, 'এর গড়িমশির কারণ কী আমরা খুঁজে দেখবো। কেন নিলো না সেজন্য কারণ বের করবো আমরা। মামলার ন্যূনতম ইনগ্রিডিয়েন্ট থাকলে সেই মামলার রুজু করতে হবে এটাই হলো আইনের স্পিড।'

বাদী সুষ্ঠু বিচার দাবি করে অভিযোগ করেন, মামলা না নেয়ার অনেক চেষ্টা করেছে পুলিশ।

নিহত তাহিরের মা সামসি আরা জামান বলেন, 'উপদেষ্টারা আছেন, খুব দ্রুত তাদের একটা ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আমরা যেন সঠিক বিচার পাই সেজন্য আলাদাভাবে বিচার ট্রাইব্যুনাল করা দরকার। তারা আমাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছে।'

এদিকে মামলা নিতে অযুহাত দেয়ায় নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রেফাতুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার।

tech