গেল বৃহস্পতিবার নিউ জার্সিতে এক সভায় বাইডেন-কামালা প্রশাসনের ব্যর্থতার লম্বা এক ফিরিস্তি তুলে ধরেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগ করেন কামালা হ্যারিস অবৈধ শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার মাধ্যমে দেশের মানুষকে বঞ্চিত করছেন। অকার্যকর করে দিচ্ছেন মেডিকেয়ার ও স্যোশাল সিকিউরিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলো।
ট্রাম্পের বক্তব্যের সরাসরি বিরোধিতা না করলেও নর্থ ক্যারোলাইনার প্রচারণা সভায় দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে নিজের বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবেন।
কামালা হ্যারিস বলেন, 'প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য নতুন কাজের সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করবো। তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হবে। একসাথে আমরা এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করবো, যেখানে নতুন করে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে।'
কোভিড মহামারির পর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেড়ে যায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি। আগামী নির্বাচনের জয়ী হলে এই মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে নিয়েই নতুন করে দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতিও দেন কামালা।
তিনি আরও বলেন, 'মধ্যবিত্তরাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শক্তি। মধ্যবিত্তদের রক্ষা করতে হলে এই শ্রেণির মানুষের বেতন বাড়াতে হবে। যেন তারা পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে পারে। যেন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের একটি উন্নত জীবন উপহার দিতে সক্ষম হই আমরা। কোনো শিশু যেন অভুক্ত না থাকে।'
এদিন মেডিকেয়ার ও স্যোশাল সিকিউরিটি তহবিলের সুবিধা শরণার্থীদের দেয়া নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগের কোনো জবাব না দিলেও, নাগরিক সুবিধা নিয়ে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন কামালা। বলেন, যে সব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে ক্ষমতায় আসলে প্রথম সেগুলোর দাম কমানোর উদ্যোগ নেবেন তিনি। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এছাড়া নাগরিকদের ওপর থেকে স্বাস্থ্যঋণের বোঝা কমাতে ফেডারেল সরকার সাহায্য করবে বলেও আশ্বাস দেন কামালা। জানান, এফোর্ডেবল হেলথ কেয়ার অ্যাক্টের আওতায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকেন। অথচ সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটি বাতিল করতে চেয়েছিলেন।
ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে, গঠনমূলক সমালোচনা ও নতুন নতুন পরিকল্পনা তুলে ধরার মাধ্যমে জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কামালা। অহিংস এই নীতি কামালাকে দেশের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে কতটা সহায়ক হবে- সেদিকেই এখন নজর বিশ্ববাসীর।