গত সপ্তাহে সারাদেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ায় এবং মোবাইল ইন্টারনেট এখনো পর্যন্ত চালু না হওয়াতে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন ই-কমার্স উদ্যোক্তারা। ভোক্তা এবং ডেলিভারি ম্যান দুই পক্ষের সাথেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।
এরকম পরিস্থিতিতে কি করে সেই ব্যবসায়ীক ক্ষতি কাটিয়ে উঠবেন সেই চিন্তার ভাজও উদ্যোক্তাদের কপালে।
বিহিশান মার্টের স্বত্বাধিকারী সানজিদা রিয়া বলেন, 'হঠাৎ করে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়াতে ফেসবুক পেইজের রিচ অনেক কমে গেছে। আমার ফলোয়ারদের আগের মতো আর মেসেজ আসে না। এর কারণে আর্থিকভাবে তো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।'
অবনির স্বত্বাধিকারী নাজিয়া বিনতে হারুন বলেন, 'আমরা প্রায় ৭ দিন ইন্টারনেটের বাইরে ছিলাম। এখনো ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম কাজ করছে না। সম্পূর্ণভাবে আমাদের ব্যবসা বন্ধ আছে।'
ই-কমার্স খাতে প্রতিদিন প্রায় ৮ লাখের মতো পণ্য অর্ডারের পরিপ্রেক্ষিতে লেনদেন হতো আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা। সেই মাধ্যম বন্ধ থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছেন এ খাতে ব্যবসা করা প্রায় সাড়ে তিন লাখের মতো উদ্যোক্তা। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনায় সরকার এবং ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের সহায়তায় কেবল মাত্র ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে বলছেন উদ্যোক্তারা।
কিনলে ডট কমের স্বত্বাধিকারী সোহেল মৃধা বলেন, 'ব্যবসায়ীদেরকে যদি আলাদা একটা ইন্টারনেট হাব দেওয়া হয়। যেটা কখনো ডাউন থাকবে না। যেহেতু এটা ব্যবসা বান্ধব। তাহলে এটা একটা সমাধান হতে পারে।'
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বেশ কয়েকবার ই-ক্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যস্ততার অজুহাতে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যায়। ই-ক্যাবে বর্তমানে প্রায় তিন হাজার সদস্য।
সাধারণ সময়ে একটি পণ্য অর্ডার করলে ৩-৫ দিনের মধ্যেই ডেলিভারি পাওয়া যায়। কিন্তু সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা এবং দেশের চলমান কারফিউ শিথিলের সময়ে কতদিনের মধ্যে একজন ভোক্তার হাতে তার অর্ডারকৃত পণ্যটি গিয়ে পৌঁছাবে সেই নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কেউই।
ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ীদের এমন সংকটকালীন সময়ে ই-ক্যাবের সহযোগিতা কামনা করেন তারা এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবার আগেই বিকল্প পথ তৈরি করারও আহ্বান উদ্যোক্তাদের।