ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ জার্মানির সামরিক খাত শক্তিশালী হলেও দেশটিকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ন্যাটোর ৭৫তম সম্মেলনে ঘোষণা আসে, ২০২৬ সালের মধ্যে জার্মানিকে তমাহাওক ক্রুজ, এসএম সিক্স ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র। স্নায়ুযুদ্ধের পর যা এই প্রথম।
এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্নায়ুযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্স-আইএনএফ অনুযায়ী নিষিদ্ধ ছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫শ’ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারা ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ ছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সবসময় ভাবতেন এই চুক্তির বিধিনিষেধ অনেক। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে এই চুক্তি ভঙ্গ করে পরমাণু হামলায় সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য। এরপর ২০১৯ সালে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র।
এই ঘোষণায় জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ বলেছেন, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র জার্মানির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম অনুষঙ্গ হতে পারে। জার্মানিকে সামরিক সহায়তা দেয়া মানে ন্যাটো শক্তিশালী হওয়া। শান্তি সুরক্ষায় এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি।
এখন নিজেরাই এতো শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটো সদস্যভুক্ত আরেক দেশ জার্মানিকে, যে দেশের সামরিক সক্ষমতা এখনই অনেক শক্তিশালী। ৱ
রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াভকল বলেন, 'বার্লিনকে এই সিদ্ধান্তের জবাব সামরিকভাবে দেয়া হবে। ন্যাটো আগে থেকেই এই সংঘাতে যুক্ত ছিল, এখন নতুন একটি উদ্যোগ নিলো।'
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলছেন, স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি আবারও তৈরি হতে পারে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগ শুধু জার্মানিকে না, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে বিনিয়োগে আগ্রহী করবে আরও অনেক দেশকে।'
এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন জার্মানির রাজনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এই সমরাস্ত্র সরবরাহের প্রক্রিয়া ভয়ভীতি আরও বাড়াবে।
রাশিয়ার হুমকিতে স্নায়ুদ্ধের পর জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে সমরাস্ত্র মোতায়েন কমিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রতিবেশি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলো জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।