তীব্র পানির সংকটে গ্রিসের পর্যটন স্পট নাক্সোস দ্বীপ

0

তীব্র পানির সংকটে ভুগছে গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট নাক্সোস দ্বীপ। এজিয়ান সাগরের সবচেয়ে উর্বর এই ভূমির বড় জলধারাটি শুকিয়ে গেছে। কূপের পানির সঙ্গে সমুদ্রের পানি মিশে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। হুমকিতে পড়েছে পর্যটন খাত।

প্রতি বছর কয়েক লাখ পর্যটক গ্রীসে ভ্রমণে যান। বিশেষ করে গ্রীষ্ম মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার পর্যটক ভিড় করেন পাহাড়ি দ্বীপ নাক্সোসে। তীব্র দাবদাহ, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং দাবানলে দিন দিন আকর্ষণ হারাচ্ছে জনপ্রিয় এই পর্যটন স্পট। যা হুমকির মুখে ফেলেছে দেশটির আয়ের অন্যতম খাত পর্যটন ব্যবসাকে।

২০ হাজার বাসিন্দার এই দ্বীপের সবচেয়ে বড় জলধারাটি শুকিয়ে গেছে। সমুদ্রের পানি ঢুকে পড়েছে সেচের কূপে। তীব্র পানির সংকটে বন্ধ হওয়ার পথে হোটেল, রেঁস্তরাগুলো। সমুদ্রের পানি শোধন করে হোটেল-মোটেল চালু রাখার চেষ্টায় আছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছি। গাছপালায় পানি দেয়া, গোসল ও টয়লেটের জন্য পানির ব্যবহার কমাতে উদ্যোগ নিয়েছি।'

এদিকে, আলু ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপের কৃষকরা সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন না। তাদের তাকিয়ে থাকতে হয় বৃষ্টির দিকে। পানির সংকটে সেচের কূপগুলো খালি হয়ে ঢুকে পড়েছে সাগরের লবণাক্ত পানি। এতে উৎপাদন কমেছে গবাদি পশুর খাদ্যসহ কৃষিপণ্যের।

খামারিদের একজন বলেন, 'গরুর খাবারের জন্য পুরোপুরি পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। বৃষ্টি না হলে এই খামার বন্ধ করে দিতে হবে।'

আরেকজন বলেন, 'পানির সংকটে বাধ্য হয়ে সমুদ্রের লোনা পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে আলুর উৎপাদন কমেছে প্রতি একরে দুই থেকে তিন টন।'

নাক্সোসের মেয়র বলছেন, দ্বীপের দুইটি জলাধারে ২ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার ব্যবহারযোগ্য পানি আছে। চলতি বছরে পানির ঘাটতি প্রায় সাড়ে ৬ লাখ ঘনমিটার।

নাক্সোসের মেয়র দিমিত্রিস লিয়ানোস বলেন, 'নাক্সোস দ্বীপে পানির সংকতে কৃষিপণ্য ও পশুসম্পদ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। বেশকিছু অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। যা বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে।'

ঘাটতি পূরণে তিনটি বহনযোগ্য পানি পরিশোধন যন্ত্র ভাড়া নিয়ে সমুদ্রের পানি পরিশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। বেশ কয়েকটি অঞ্চলে সুইমিং পুল ব্যবহারে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। গ্রিসের বেশিরভাগ অংশে কয়েকমাস ধরে বৃষ্টি নেই। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খরা মোকাবেলা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে দ্রুত।

ইএ