গেল এক দশকে দেশে যেসব বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে তার অধিকাংশের সাথেই যুক্ত চীন। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করেছে তেমনি অর্থনীতিতে দিয়েছে গতি। শুধু যোগাযোগ নয়, এই সময়ে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
বর্তমানে বাংলাদেশ চীনের বিনিয়োগ ছাড়িয়েছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার, দেশের মোট আমদানির ২৫ শতাংশই আসে চীন থেকে। এছাড়াও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, রাখাইন সংকট সমাধানে চীনের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভাগ্য। তিস্তা মহাপরিকল্পনায়ও আগ্রহ দেখিয়েছে চীন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, 'তিস্তা বাংলাদেশের নদী। তিস্তার ব্যাপারে বাংলাদেশই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমরা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আগ্রহী।'
বক্তব্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনার পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়েও কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সংকট বারবার পিছিয়ে দিচ্ছে। সেফটি দরকার। তারা ব্যাক করলে তাদের সেফটি নিয়ে সমস্যা আছে। তবে আমরা সেটেল করার চেষ্টা করছি। এটা সহজ নয়। এতে চায়না ছাড়া অন্য স্টেকহোল্ডারদেরও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে আসিয়ানের এগিয়ে আসা দরকার।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই চীন সফর করবেন। সফরে দেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগীর সাথে কোন কোন বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে তার ধারণা পাওয়া গেল। মতবিনিময়ে চীনা রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পঞ্চম চীন সফরকে মাইলস্টোন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘উন্নয়ন, ব্যাবসা, বিনিয়োগ, কৃষি, শিক্ষা খাত গুরুত্ব পাবে এই সফরে।’
তিনি বলেন, 'চায়না বাংলাদেশ সম্পর্ক সব সময় ভালো। আমাদের এ বছর সম্পর্কের ৫০ বছর। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ইতিহাসের মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। চায়না বাংলাদেশের উন্নয়নে সবসময় পাশে থাকতে প্রস্তুত।'
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, 'চায়না ব্রিকসের সদস্য হতে সহযোগিতা করবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাশে থাকবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি সবার সাথে বন্ধুত্ব। সেটা বাংলাদেশকে স্পেশাল করেছে। আমরা সেটা সম্মান করি।'
চলতি মাস থেকে ঢাকা-বেইজিং ফ্লাইট শুরু হচ্ছে। সপ্তাহে ১৮টি ফ্লাইট চলাচল করছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে নিবিড় করবে বলেও জানান তিনি।