আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক জোটের সামরিক অভিযানে তালেবান সরকার পতনের ন'বছর পর প্রথমবারের মতো ২০১০ সালে আফগান জাতীয় নারী ক্রিকেট দল গঠিত হয়। যদিও নানা হুমকির কারণে কয়েক বছর দলটিকে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে দেয়নি আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল আইসিসির শর্ত অনুসারে তার পূর্ণ সদস্য ১২টি দেশে জাতীয় নারী ক্রিকেট দল থাকতে হবে। আফগানিস্তান ২০১৭ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। এরপর ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে কর্তৃপক্ষ আফগান জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের ২৫ জন খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করে।
কিন্তু এর এক বছরেরও কম সময়ে মধ্যে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে এলে নারী ক্রিকেটারসহ সারা দেশের নারীদের স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যায়। তালেবান সরকার বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক এবং খেলাধুলায় নারীদের নিষিদ্ধ করেছে।
দেশ থেকে পালিয়ে নির্বাসিত রয়েছেন আফগান জাতীয় নারী দলের ক্রিকেটাররা। তিন বছরেও সরকার থেকে অনুমতি না মেলায় এবার শরণার্থী দল হিসেবে ক্রিকেট খেলতে চান দলটির মেয়েরা। সে দলের ১৭ জন একত্রিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। দেশের প্রতিনিধিত্ব না করতে পারায় ভিনদেশে আফগান নারীদের নিয়ে শরণার্থী দল গঠনের জন্য আইসিসিকে চিঠি দিয়েছে তারা।
চিঠিতে তারা বলেছেন, 'আফগানিস্তানের সরকারি নীতির কারণে, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এবং আইসিসি তাদের জাতীয় দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারেনি। আমরা এসিবির ব্যানারে খেলার দাবি জানাচ্ছি না। অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থী দল হিসেবে নিজেদের ক্রিকেট প্রতিভা দেখাতে চাই। আফগান নারীদের যারা ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু আফগানিস্তানে পারছেন না। তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে উৎসাহিত করবে। আইসিসি থেকে অনুমোদন ও আর্থিক সহায়তা পেলে দুর্দান্ত অর্জনগুলোর প্রদর্শন করতে চাই।'
শরণার্থী দল গঠন করার উদ্দেশ্যও খোলাসা করা হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়েছে, 'শরণার্থী দল গঠনের মূল উদ্দেশ্য, আমাদের প্রতিভা বিকাশ করা এবং প্রদর্শন করা। আফগানিস্তানে থাকা নারীদের স্বপ্ন দেখানো এবং নারীরা সেখানে যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন, তা তুলে ধরা।'
এর আগে ২০২১ সালেই গ্লোবাল ফুটবলার অ্যাসোসিয়েশন 'ফিফপ্রো' আফগানিস্তানের নারী ফুটবলারসহ ফুটবলে জড়িত ব্যক্তি ও সম্ভব হলে তাদের পরিবারকেও দেশটি থেকে সরিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া সরকারকে অনুরোধ করেছিল। পঞ্চাশ আফগান নারী ফুটবলার, তাদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশেষ জরুরি উড়োজাহাজ ২০২১ সালের ২০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছায়।