২০১৬ সালের ১ জুলাই দিনটি ছিল শুক্রবার। সন্ধ্যার পর পর হঠাৎ খবর আসে গুলশানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই লিখেন একটি রেস্টুরেন্টে সশস্ত্র হামলাকারীরা ঢুকে কয়েকজনকে জিম্মি করেছে। ততক্ষণে সঠিক ঘটনা কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। পরে জানা গেলো গুলশান দুইয়ের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা করা হয়েছে। সেখানে থাকা বিদেশি নাগরিকসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছে জঙ্গিরা।
হামলার খবর পেয়ে পুলিশ এগিয়ে গেলে জঙ্গিদের আক্রমণে তাৎক্ষণিক নিহত হন পুলিশের সিনিয়র সহকারি কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন। একের পর এক নৃশংস হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে রেস্টুরেন্টে থাকা লোকদের হত্যা করা হয়। ইতালির ৯ জন, জাপানের ৭ জন, ভারতের একজন ও বাংলাদেশের তিনজনকে হত্যা করে জঙ্গিরা।
পরে আটজনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। একজনকে দেয়া হয় খালাস।
বিচারিক আদালতের দেয়ার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি করে গেলো বছরের ৩০ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের রায়ে সাত আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়।
হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা। তিনি জানান, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর আপিল করা হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন,'কতগুলো নিরপরাধ মানুষকে তারা হত্যা করেছে ধর্ম ও তাদের উগ্রবাদিতার নামে। এখন যাদের আদেশগুলো হলো, তারা তাদের পেছন থেকে মদদ দিয়েছে। যার ফলে ওদের প্রতি বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না। তারপরও আদালত কি কারণে দেখিয়েছেন সেটা দেখতে হবে, দেখে মূল জাজমেন্টটা আমরা এখনও পাইনি। এটা পাওয়ার পর আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।'
রায়ে আদালত বলেন, হোলি আর্টিজানে হামলা করে জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহি:প্রকাশ ঘটানো হয়েছে।