কোরবানি ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। আর এই উৎসবকে সামনে রেখে পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিশোরগঞ্জের খামারিরা। গরুকে দেশিয় খাবার, কাঁচা ঘাস, গমের ভুষি, খৈল, চালের গুড়া খাইয়ে বড় করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় বসতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। হাটের ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে খামার থেকেই পশু কিনছেন অনেক ক্রেতা।এছাড়া পাইকাররাও খামার থেকে গরু কিনছেন হাটের জন্য। অনেকে আবার কোরবানির পশু কিনছেন অনলাইনে ।
এতজন খামারি বলেন, 'আমরা অফলাইনেও বিক্রি করছি, আবার অনলাইনেও বিক্রি করছি। আবার অনেক ক্রেতা খামারে আসছেন, পশু দেখে বুকিং দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের জায়গায় ঈদের আগের দিন আমরা গরু পৌঁছিয়ে দেবো।'
জেলায় এবার পশুর সরবরাহ ভালো থাকলেও গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় পশুর দাম কিছুটা চড়া আছে। তবে ভারত কিংবা মায়ানমার থেকে গরু আসলে লোকসানের শঙ্কা করছেন খামারিরা।
কিশোরগঞ্জের সিদ্দিক এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আতাউল্লাহ সিদ্দিক বলেন, 'ভারত আর বার্মা থেকে গরু আসলে আমাদের দেশের খামারিরা শেষ হয়ে যাবে। এখন গরুর খাবারের দামে যে অবস্থা চলছে এ অবস্থা চললে ক্ষুদ্র খামারিা কোনো অবস্থাতেই টিতে থাকতে পাবে না।'
জেলায় এ বছর ২৩ হাজার ৩৬০জন খামারি ও কৃষক মোট ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৬টি পশু প্রস্তুত করেছেন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য দেড় হাজার কোটি টাকা। জেলায় মোট কোরবানির পশুর চাহিদা ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ২৭ হাজারের বেশি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে যা বিক্রি হবে রাজধানী ও আশেপাশের জেলায়।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, 'গতবছরের তুলনায় এবার আমাদের উৎপাদন বেশি হয়েছে। এ বছর আমাদের উদ্বৃত্ত আছে ২৭ হাজার ৭৬৩টি পশু।'
হাওর বেষ্টিত এই জেলায় প্রাকৃতিকভাবেই রয়েছে পশুপালনের ব্যাপক সুবিধা। ফলে দিন দিন বাড়ছে খামারিদের সংখ্যা, সেই সাথে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। সঠিক পরিচর্যা পেলে এই খাত সারাবছরই অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।