কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

ধানের দর নিয়ে জটিলতায় কৃষক

সরকার ধানের দাম বেঁধে দিলেও সুফল মিলছে না কৃষকের। আর্দ্রতার মাপকাঠি আর নির্দিষ্ট সংখ্যক কৃষক ধান বিক্রির সুযোগ পাওয়ায় অধিকাংশ কৃষকই হাটে কম দামে ধান বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকার নির্ধারিত ১ হাজার ২৮০ টাকার জায়গায় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় প্রতিমণ ধান বিক্রি করছেন তারা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের দাবি, ধানের ক্রয়নীতি পরিবর্তনের।

মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষক তার উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলেন। কখনো ঝড়, বৃষ্টিতে নষ্ট হয় ফসল আবার কখনো বাজারে ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষক। এভাবেই চলে সারা বছরের জীবন-জীবিকা।

এবার বোরো মৌসুমে বগুড়ায় ধান কাটা মাড়াই প্রায় শেষ। বাজারে ধানের সরবরাহ ভালো তবে দাম একেবারে কম। একমণ ধান বিক্রি করে একজন কৃষাণের মজুরির খরচ মিটাতে হচ্ছে। অথচ সরকার নির্ধারিত প্রতিমণ ধানের দাম ১ হাজার ২৮৯ টাকা।

কৃষক বলেন, আমরা সরকারকে ধান ঠিকি দেই কিন্তু সরকার তো নেয় না। সরকারের যে লোকগুলো থাকে তারা ধান কিনার সময় নানা অজুহাত দেয়। আমরা ধান শুকিয়ে নিয়ে যাই আর তারা বলে শুকানো হয় নাই। দামে মিলতেছে না।

সরকার নির্ধারিত আর্দ্রতায় ধান শুকাতে না পারা এবং নগদ টাকা জরুরি হওয়ায় কৃষক কম দামে ধান বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক নাজমুল হক মন্ডল। তিনি বলেন, 'গুদামগুলোতে আমরা যেভাবে ধান ক্রয় করি কৃষক ওইভাবে ধান দিতে পারছে না। যেহেতু তারা বজায় রাখতে পারছে না তাই ওই দামটা তারা পাচ্ছে না।'

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. হুমায়ন কবির বলেন, 'সরকার নির্ধারিত আর্দ্রতার উপরে ধান গুদামে নিলে সে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গুদামগুলোতে সরকার ১৪ ভাগ আর্দ্রতায় ধান কিনছে। তবে দেশে নতুন আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রিত গুদাম নির্মাণ হচ্ছে। এটি নির্মাণ হলে এ সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।'

৭ মে থেকে সরকার বোরো মৌসুমে ধান চাল সংগ্রহ শুরু করেছে, চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এ মৌসুমে দেশে কৃষকের কাছ থেকে ৫ লাখ টন ধান, মিল মালিকদের কাছ থেকে ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং ১ লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহ করবে।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, 'নগদ টাকা না থাকা এবং ক্রয় কেন্দ্রগুলো নাগালের মধ্যে না থাকায় কৃষক ন্যায্য মূল্য হতে বঞ্চিত হচ্ছেন।'

বগুড়ায় ১১ হাজার ৬ টন ধান এবং ৫৫ হাজার ৪৩৭ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিপরীতে এ পর্যন্ত ১ হাজার টন ধান এবং ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। গত দুই বছর বগুড়ায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ।