দেশে এখন
0

ভোলায় রিমালের তাণ্ডবে ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ক্ষতবিক্ষত ভোলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। জলোচ্ছ্বাসের চাইতে বাঁধের উচ্চতা কম হওয়ায় স্রোতের তোড়ে ভেঙেছে প্রায় ১৬৫ মিটার বেড়িবাঁধ। জোয়ারের জলে ভেসেছে ৫ ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম।

ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার দাশের হাট গ্রামের কৃষক মফিজুল ইসলাম। রিমালের আঘাতে দুমড়ে মুচড়ে উড়ে যায় তার দোচালা ঘর। অতিজোয়ারে প্লাবিত হয় ভিটেমাটি। সর্বস্ব হারিয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে এখন ঠাঁই নিয়েছেন খোলা আকাশে নিচে।

তিনি বলেন, 'বন্যায় ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন বউ বাচ্চা নিয়া থাকার জায়গা নাই। অনেক ক্ষতি হইয়া গেছে।'

একই অবস্থা মনপুরার প্রায় ৩ শতাধিক পরিবারের। গেলো ২৭মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে উপজেলা সদর, সাকুচিয়া, রামনেওয়াজ এলাকার ১২ পয়েন্টে প্রায় ১৬৫ মিটার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ১৫টি গ্রাম। বিধ্বস্ত হয় মাস্টার হাট, রহমতপুর, সোনারচর, সাকুচিয়া ও চরজতিন গ্রামের ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও বসতবাড়ি।

উপজেলার ৭৮ কিলোমিটার বাঁধের মাত্র ২ কিলোমিটার টেকসই সিসিব্লক মোড়ানো। ১০ ফুট উচ্চতার বাকি ৭৬ কিলোমিটার বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ। জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে দরকার ১৪ ফুট উঁচু বাঁধ।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মনপুরা উপজেলা রক্ষায় এক হাজার ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার নদীভাঙন রোধ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। যার আওতায় ৫২ কিলোমিটার উপকূলীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, চারদিকে ১৭১টি সাব মার্সিবল স্পার, ৩৭ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও টিউব ডাম্পিং এবং ১০টি স্লুইচ গেট নির্মাণের কথা রয়েছে।

অনুমোদনের প্রায় ৩ বছর পর কাজ শুরু হলেও রয়েছে ধীরগতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ। এমন অবস্থায় রিমালের তাণ্ডবে ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কার না হলে আসন্ন পূর্ণিমায় বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা স্থানীয়দের।

দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মেঘনার ভাঙন থেকে রক্ষা করা গেলে পর্যটনের অপার সম্ভবানাময় এই উপজেলাটি দেশের অর্থনিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা স্থানীয়দের।