স্বাস্থ্য
দেশে এখন
0

তীব্র ডায়রিয়া ও কলেরা নিয়ে আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি ১২০০ রোগী

রাজধানীতে ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ বেড়ে অবস্থা বিপদজনক বলছেন চিকিৎসকরা। ২৪ ঘণ্টায় আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ২শ' রোগী। ভর্তি রোগীর প্রায় ৪০ শতাংশের তীব্র ডায়রিয়া ও কলেরা। চিকিৎসকরা জানান দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগী আসছেন। বিশুদ্ধ পানি পান, খোলা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মিরপুর থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছে হাসপাতালে ১ বছর ১০ মাস বয়সী ইরহা। মুখে রুচি নেই, খেতে তাই অনীহা।

বাবা আরেফিনের অভিযোগ বৃষ্টির কারণে মিরপুরে স্যুয়ারেজ লাইন আর ওয়াসার পানির পাইপ এক হয়ে গিয়েছে। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এলাকাজুড়ে সরবরাহ করা সেই পানি খেয়ে অসুস্থ তার মেয়ে।

আরেফিন বলেন, 'বৃষ্টির কারণে স্যুয়ারেজ লাইন ও ওয়াসার পানির লাইন এক হয়ে যায়। এই সমস্যা যদি থেকে যায় তাহলে আমাদের ডায়রিয়া জনিত রোগী নিয়ে আসতে হবে।'

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ আইসিডিডিআরবি'র চিত্র এটি। সাড়ে ৩শ' রোগীর ধারণক্ষমতার হাসপাতালটিতে এখন ভর্তি আছে ১ হাজার ২০০ রোগী। প্রতি ঘন্টায় ভর্তি হচ্ছেন ৬০ থেকে ৬৫ জন নতুন রোগী।

রোগীদের মধ্যে একই পরিবারের একাধিক সদস্য রয়েছে। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্কদের আক্রান্তের হার বেশি। ঢাকা উত্তর সিটির মিরপুর ১১,১২,১৩, কাফরুল, শেওড়াপাড়া এবং দক্ষিণ সিটির শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ির রোগী বেশি রয়েছে এ হাসপাতালে।

রোগীদের একজন বলেন, 'আমার ডায়রিয়া হয়েছে এবং পেটে ব্যাথা। ওয়াশ রুমে ১০ থেকে ১৫ বার গিয়েছি।'

আরেকজন বলেন, 'খাবারের সমস্যার কারণে এই সমস্যা হয়েছে সঙ্গে তীব্র গরম।' 

ভর্তি রোগীর প্রায় ৪০ শতাংশের তীব্র ডায়রিয়া ও কলেরা। চিকিৎসকরা জানান দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগী আসছেন। চাপ আরও বাড়লে হাসপাতালের বাইরে তাবু টাঙিয়ে দেওয়া হবে চিকিৎসা, রাখা হয়েছে সে প্রস্তুতিও।

সাইন্টিস্ট ডা. লুবাবা শাহরিন বলেন, 'হাসপাতাল হঠাৎ করেই রোগীর সংখ্যা ৩শ’ থেকে ৪শ’ বেড়ে গিয়েছে। শনিবারের দিন আমাদের ১৩শ’ উপরে রোগী ছিল। এখনো ১২শ’ উপরে রোগী প্রতিদিন আমরা পাচ্ছি।'

এদিকে শিশু হাসপাতালেও বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৬ জন। ভর্তি আছে ১১ জন শিশু। ঠাণ্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি ৬৭ জন।

রোগীর স্বজনদের একজন বলেন, 'বাচ্চার ঠান্ডা, কাশ, জ্বর নিউমোনিয়া হয়ে গিয়েছে। যারা ফলে শিশু হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।'

চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ গরম বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। বিশুদ্ধ পানি পান, খোলা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ তাদের।

শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'এই গরমের ভিতর বাইরের পানি পান না করাই ভালো। বেশি দরকার পড়লে বাইরের ডাবের পানি খেতে পারে। খোলা বাজারে ফুসকা, শরবত পরিহার করতে হবে।'

এ অবস্থায় বিশুদ্ধ পানি পান করা, অস্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়াসহ তীব্র রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

ইএ