বিদেশে এখন

খাদ্যবর্জ্য থেকে আমিরাতে জৈব সার তৈরি

হোটেল-রেস্তোরাঁর উচ্ছিষ্ট খাবার দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। এর মাধ্যমে মরুভূমিতে কৃষি বিপ্লব ঘটানোর পাশাপাশি খাদ্যবর্জ্য থেকে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইড রোধের চেষ্টা করছে দেশের একটি রিসাইক্লিং অ্যাপ। এতে দেশেই জৈব সার উৎপাদন হওয়ায় কৃষিখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই। বিশ্বে প্রতিদিন খাদ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশই পরিণত হয় বর্জ্যে। বছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩০ কোটি টনের উপরে। যা থেকে বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয় ৩৩০ কোটি টনের সমপরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড। এতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা আরও তরান্বিত করছে।

খাদ্যের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে দিয়ে আবর্জনার পাহাড় না গড়ে, ফেলনা খাদ্যবর্জ্য হয়ে উঠতে পারে অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে আয়ের পাশাপাশি ঠেকানো যাবে পরিবেশ দূষণও। একটি রিসাইক্লিং অ্যাপের মাধ্যমে এই থিওরিতে এগুচ্ছে আমিরাতের একটি রিলুপ প্ল্যাটফর্মের উদ্যোক্তারা।

বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব গড়ায় অবদান রাখা দুবাইয়ের এই প্ল্যাটফর্মটির যাত্রা শুরু ২০২১ সালে। রিলুপ অ্যাপের মাধ্যমে বর্তমানে ১০০টির বেশি হোটেল ও রেস্তোরাঁর বর্জ্য সংগ্রহ করছে তারা। এছাড়া তিন বছরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে রাখা আবর্জনা থেকে অন্তত ১০ লাখ কেজি খাদ্য বর্জ্য সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে রিলুপ প্ল্যাটফর্মটি। যা থেকে ১২ লাখ কেজি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন রোধ করা সম্ভব হয়েছে দাবি করা হচ্ছে। খাদ্য বর্জ্য থেকে জৈব সারে রূপ দিয়ে মরুভূমির বালুকাময় মাটিকে চাষাবাদ উপযোগী করে গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জে এগুচ্ছে উদ্যোক্তারা।

দুবাইয়ের রিলুপ অ্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইউসেফ চেহাদে বলেন, 'এখানে কৃষি শিল্পের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হল উপযুক্ত মাটি। কারণ চাষাবাদের জন্য ৯০ শতাংশ মাটি ও সার আমদানি করতে হয়। অথচ আমরা খাদ্যের বর্জ্য থেকে স্থানীয়ভাবে জৈব সার উৎপাদন করে মরুভূমির মাটিকে কৃষি কাজের উপযোগী করতে পারি। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানো সম্ভব।'

খাদ্য বর্জ্য থেকে তৈরি এসব জৈব সারে চাহিদা বাড়ছে দেশটিতে। যা ব্যবহার করে মরুভূমিকে পুষ্টিকর ফল ও শাকসবজি উৎপাদনে উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে। নিজ দেশেই জৈব সার উৎপাদন শুরু হওয়ায় কৃষিখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয়রা। গড়ে তোলা হচ্ছে কৃষি খামার।

সংযুক্ত আবর আমিরাতের কৃষি উদ্যোক্তা হামাদ খালফান আল-মুতাওয়া বলেন, 'কৃষিকাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর একটি হল প্রাকৃতিকভাবে তৈরি জৈব সার। বর্তমানে আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে খাদ্য বর্জ্য থেকে তৈরি কম্পোস্ট। এটির উৎপাদন বাড়ানো উচিত। ভবিষ্যতে কৃষকদের জন্য এটি টেকসই খাত হতে পারে।'

২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য বর্জ্যের কারণে সৃষ্ট ক্ষতিকর প্রভাব ৫০ শাতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এগুচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে খাদ্য বর্জ্য সংগ্রহ করে তৈরি জৈব সার প্রস্তুতের এই প্রক্রিয়া।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর