দেশে এখন

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৬১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত

ঘূর্ণিঝড় রিমালে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ৬১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫টি স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে গেছে লবণ পানি। নোয়াখালীতে ভেসে যায় কয়েক কোটি মাছের ঘের। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় ৪ উপজেলার গবাদি পশু। পানিতে ধসে গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ৫০ ফুট বেড়িবাঁধ। এছাড়া জেলার মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে কলাপাড়ায় আড়াইহাজার পুকুর, ৪৬৫ টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবের সঙ্গে জোয়ারের অস্বাভাবিক পানি বাড়ার কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন একরের পর একর তলিয়েছে ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের।

নোয়াখালীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতায় রূদ্ররূপ ধারণ করে। ভেসে যায় কয়েক কোটি মাছের ঘের। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় ৪ উপজেলার গবাদি পশু। এসব অঞ্চল প্রায় ৩ দিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পড়েছেন এখানকার প্রায় ৪ লাখ বাসিন্দা।

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন বলেন, 'ঘর নেই। সব উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বাতাসের সঙ্গে গাছপালা ভেঙ্গে গেছে।'

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব এখনও চলছে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। জোয়ারের পানি বাড়ায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধের একাধিক পয়েন্টে ফাটল দেখা দিয়েছে। আর রিং বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার মাছের ঘের। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমের বাগান।

ঝড়ের তীব্রতা এখনও অব্যাহত রয়েছে সাগরপাড়ের দুই উপজেলা কলাপাড়া ও কুয়াকাটায়। সুইচ গেট ভেঙে পানিতে তলিয়েছে নিম্নাঞ্চল। পানিতে ধসে গেছে কলাপাড়ার চাকাইয়ার ৫০ ফুট বেড়িবাঁধ। এছাড়া জেলার মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে কলাপাড়ায় প্রায় ২ হাজার ৭০০ পুকুর, ৪৬৫ টি মাছের ঘের তলিয়ে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

আরেকজন বলেন, 'বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে ঘের তলিয়ে গিয়েছে।'

২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের ক্ষত আজও বয়ে বেড়াচ্ছে বাগেরহাটের শরণখোলা এলাকার মানুষ। সেই ঝড়ের ভয়াবহতা আবারো মনে করিয়ে দিয়েছে রিমাল। এখানকার বেশিরভাগ এলাকাই তলিয়ে গেছে পানিতে। শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে মাছ চাষ করে। কিন্তু অন্তত ৩টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে জীবিকার অন্যতম অবলম্বন মাছের ঘের।

এছাড়াও জোয়ার জলোচ্ছ্বাসে পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালির চরমোন্তাজে বেরিবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয় পানি প্রবেশ করে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠিসহ বেশিরভাগ উপকূলীয় জেলা। এসব অঞ্চলের পুরোপুরি আর্থিক ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে প্রশাসন।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর