ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

আগাম নির্বাচন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্রিটেনে

ঋষি সুনাক সরকারের মেয়াদ প্রায় ছয় মাস বাকি থাকতেই ব্রিটিনের জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা এলো। যা নিয়ে শুরু হয়েছে কৌতূহল। রহস্যের জট খুলতে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী সংবাদ প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান। অন্যদিকে আগাম নির্বাচন নিয়ে ব্রিটিশদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিরোধী দল লেবার পার্টি বলছে, এবারের নির্বাচনে ঋষি সুনাকের রক্ষণশীল সরকারের সৃষ্ট নানা 'বিশৃঙ্খলা'র অবসান ঘটবে।

১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে গতকাল (বুধবার, ২২ মে) জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে রাজা দ্বিতীয় চার্লসের অনুমতি পাওয়ায় ৪ জুলাই ভোটের দিন নির্ধারণ হয়েছে বলে জানান তিনি। ২০২২ সালে অক্টোবরে লিজ ট্রাসের বদলে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আসা কনজারভেটিভ পার্টির নেতার চেহারায় এসময় ছিল বিষাদের ছাপ। নিয়ম রক্ষায় কিছুটা মনোবেদনা নিয়েই ব্রিটিশদের জানান ভোটের দিনক্ষণ।

সরকারের মেয়াদ প্রায় ছয় মাস হাতে রেখে ঋষি সুনাকের আগাম নির্বাচনের এই ঘোষণায় ব্রিটেনের সাধারণ জনগণের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারে পরিবর্তন আনা জরুরি হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি কিংবা বিরোধী লেবার পার্টি কারও উপরই আস্থা রাখতে পারছেন না বহু মানুষ। তবে জনমত জরিপে কিছুটা এগিয়ে আছে লেবার পার্টি। ধারণা করা হচ্ছে, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা লেবার পার্টিই হয়তো সরকার গঠন করবে।

স্থানীয় একজন বলেন, 'সঠিক ব্যক্তি ক্ষমতায় আসুক এবং সঠিক নীতিগুলো নিয়ে এগিয়ে যাক এটাই আমার চাওয়া। তাদের জন্য আগাম শুভকামনা, তবে আমাদের অবশ্যই পরিবর্তন দরকার। ক্ষমতাসীনরা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদেরকে নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করেছে। তাই আমি তাদের কাউকেই সৎ বলে মনে করি না এবং ভোট দেব না।'

আগাম নির্বাচনের ঘোষণায় ব্রিটেনে রক্ষণশীল সরকারের বিশৃঙ্খলা'র অবসান ঘটানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন লেবার পার্টির প্রধান কেয়ার স্টারমার। ধারণা করা হচ্ছে, লেবার নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন তিনি। তবে ভোটের আগের এই ছয় সপ্তাহে অনেক নেতাকে এই পদ দখলের প্রতিযোগিতায় হয়তো নামতে দেখা যাবে।

কেয়ার স্টারমার বলন, 'আমরা আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের রাজনীতি উভয়ই পুনঃস্থাপন করতে চাই। যার মধ্য দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকার আদায় হবে। আমরা এমন দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করি, যে অর্থনৈতিক শক্তি কোনো না কোনোভাবে শুধু শীর্ষস্থানীয় মানুষদের সুবিধা দেয়।'

কেন এখনই ভোটের ডাক দিতে হলো? ভোটের ফল কি হতে পারে? ঋষি সুনাকের আগাম নির্বাচনের ঘোষণায় এমন হাজারও প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। আর এসব ইস্যুতে তৈরি হওয়া রহস্যের জট খোলার চেষ্টা করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান।

সংবাদ মাধ্যমটির বিশ্লেষধর্মী প্রতিবেদন বলছে, ভোটের তারিখ অনুযায়ী দিনটি হবে বৃহস্পতিবার। আর ব্রিটেনে বৃহস্পতিবার ভোট হওয়ার রেওয়াজ বহু পুরনো। এমনকি দিনটি বছরের দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মাসের প্রথম সপ্তাহে পড়েছে। ভোটের এমন প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছিলেন সুনাক। গার্ডিয়ানের হোয়াইটহল সম্পাদক রোয়েনা ম্যাসন বলছেন, বিশেষ করে স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন্য ভোটের সময়টি যথার্থ হয়নি। সেখানকার অধিবাসীরা এই সময় ছুটি কাটাতে ভ্রমণে চলে যান।

১০ ডাউনিং স্ট্রিটের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল (শুক্রবার, ২৪ মে) মুলতবির পর ৩০ মে ভেঙ্গে দেয়া হবে পার্লামেন্ট। পদ হারাবেন সংসদ সদস্যরা। যারা নির্বাচন করতে চান, তারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ফিরে গিয়ে প্রচারে নামবেন। তবে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আগের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন মন্ত্রীরা।

এসএস