দেশে এখন

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অবিস্মরণীয়

দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করাসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৩ সালের এদিন বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদকে ভূষিত করা হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর শান্তির নীতি আদর্শ মেনে বাংলাদেশকেও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিতে হবে।

যে বিশ্বে থাকার কথা ছিলো শান্তি-সমৃদ্ধি, সেখানে দেশে দেশে এখন যুদ্ধ-বিগ্রহে মানুষ ঘরহীন। আধুনিক অস্ত্রে মৃত্যু বরণ করে নিতে হচ্ছে। শান্তি ও মানবাধিকারের বার্তা এখন যেন কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। গাজা উপত্যকায় হত্যাযজ্ঞ হোক আর ইউক্রেন-রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ কিংবা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সংকট, সবই যেন পৃথিবীকে অশান্তির সাগরে ফেলে দিয়েছে।

যদিও এই অশান্তি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে, যা দিনে দিনে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় তৈরি নিত্য নতুন মরণাস্ত্র ব্যবহারে হয়েছে আরও রক্তক্ষয়ী। তবুও কিছু মানুষ এই অশান্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মানবজাতির কাছে মহামানব হয়েছেন।

যে পৃথিবীতে সুখে-শান্তিতে মানুষের বসবাসের স্বপ্ন দেখতেন, শোষণের বিরুদ্ধে আমৃত্যু ছিলেন সোচ্চার। তেমনই একজন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার সুচিন্তিত নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ দেশকে স্বাধীন করেছে।

বিশ্ব ও আঞ্চলিক শান্তিতে অবদান রাখায় ১৯৭৩ সালের এদিন অর্থাৎ ২৩ মে বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্যের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদক দেয়া হয়। সারা জীবনের দর্শন আর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপটে এই পুরস্কার দিতে সম্মত হয় পরিষদ।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘যেসব দেশ শান্তির পক্ষে ছিল তিনি সেসব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। জুলিও কুরি পদক পাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, বিশ্বের যেকোন স্থানেই হোক না কেন সেখানেই নিপীড়িত মানুষ ও শান্তির পক্ষে বাঙালি জাতি চিরসাথী হয়ে থাকবে।’

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘শান্তি যে প্রয়োজন সেটা বাংলাদেশের চেয়ে কিন্তু কেউ বেশি বুঝেনি। সে কারণেই কিন্তু বিশ্ব শান্তি পরিষদ এই পদক কিংবা সম্মান বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর শান্তির সেই বার্তা আজও প্রযোজ্য। পৃথিবীতে যখন এখনও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, মানুষের ন্যায্য স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে তখনও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গঠিত দেশ চুপ করে নেই বলে মনে করেন এই সাংবাদিক।

১৯৫৯ সাল থেকে শুরু হওয়া জুলিও কুরি পদক বঙ্গবন্ধুর আগে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো, ভিয়েতনামের সংগ্রামী নেতা হো চি মিন, ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাতও পেয়েছেন। সম্প্রতি বিশ্বশান্তির অন্যতম নেতা বঙ্গবন্ধুর নামে আগামী বছর থেকে একইদিনে ‘বঙ্গবন্ধু শান্তি’ পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর