বিদেশে এখন

মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রবণতা বাড়ছে

বিশ্বে মহাকাশ শিল্প বিস্তৃত হওয়ার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রবণতা বাড়ছে। কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহারের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস।

মানুষের তৈরি হলেও দৈনিক জীবনে কৃত্রিম উপগ্রহের ভূমিকা অনেক। স্যাটেলাইটের অনেক সুবিধা সাধারণ মানুষ উপভোগ করলেও জানে না এই সুবিধা কোথায় থেকে পাচ্ছে তারা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই বাড়ছে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রবণতা। অর্থনীতিতে স্যাটেলাইট বাণিজ্যের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

ঠিক কিভাবে আমাদের সহযোগিতা করে স্যাটেলাইট। বাসায় থাকা টেলিভিশনে সরাসরি সিগন্যাল পাঠায় কৃত্রিম উপগ্রহ। ক্যাবল আর টিভি নেটওয়ার্কের মেরুদণ্ড বলা চলে স্যাটেলাইটকে। বিমান চলাচলরত অবস্থায় যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ব্যবহার করে। এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ এলাকাতে যোগাযোগ স্থাপনেও ব্যবহার করা হয় স্যাটেলাইটের নেটওয়ার্ক।

স্যাটেলাইটের নেভিগেশন সিস্টেম দিয়ে বের করা যায় যে কারো অবস্থান। জিপিএস ব্যবহার করে পাওয়া যায় যেকোন যানবাহনের অবস্থান। সাধারণ মানুষ আর সেনাবাহিনী যেকোন যানের জন্য জিপিএস ব্যবহার করার পাশাপাশি সমুদ্রে কোনো জাহাজ বিপদে পড়লে জিপিএস ব্যবহার করে অবস্থান জানিয়ে সাহায্য পেতে পারে।

ব্যবসাতেও সমানভাবে কাজে লাগছে স্যাটেলাইট। কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটগুলোর অনেক বড় এলাকায় যোগাযোগ স্থাপনের সক্ষমতা আছে। বড় বড় কোম্পানি আর ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলো দ্রুত ক্রেডিট কার্ডের অনুমোদন দিতে পারে গ্রাহককে। দুর্গম শহরে ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে গ্যাস স্টেশনে অর্থ পরিশোধ করতে পারে গ্রাহকরা।

এছাড়া আবহাওয়ার বিস্তারিত আবহাওয়াবিদদের জানায় স্যাটেলাইট। পৃথিবীর মানুষ স্যাটেলাইটের তথ্য থেকে জানতে পারে, কোথায় আগ্নেয়গিরির সম্ভাবনা আছে, কোথায় তেল বা গ্যাসক্ষেত্র জ্বলছে, বড় হারিকেন বা আর এল নিনো কোথায় আঘাত হানবে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গবেষণায় স্যাটেলাইটের ভূমিকা অনেক। সমুদ্রের তাপমাত্রা মাপে স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইটের রাডারগুলোর পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা গেলো এক দশকে কতো বাড়লো। স্যাটেলাইটের ছবি দিয়ে হিমবাহের পরিবর্তন ধরা পড়ে। আর স্যাটেলাইট বৃষ্টিপাত আর গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ নিয়ে পূর্বাভাস দিতে পারে।

মাটির নিচে পানি আর খনিজ পদার্থের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে স্যাটেলাইট। বড় পরিসরে অবকাঠামো উন্নয়নে কোথাও লিকেজ আছে কিনা, তদারকি করতে পারে এই স্যাটেলাইট। ভূপৃষ্ঠের ভালো মানের ছবি তুলে বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করা যায়। আগে এই স্যাটেলাইটের ছবি শুধু সেনাবাহিনীর কাছে থাকলেও এখন গুগল আর্থের মাধ্যমে এই ছবি যে কেউ পেতে পারে।

মহাকাশে স্যাটেলাইটের সংখ্যা বাড়লে অর্থনীতি, জলবায়ু, মহাকাশ গবেষণা কিংবা নিরাপত্তা, যেকোন কাজেই স্যাটেলাইটকে ব্যবহার করা সম্ভব। কিন্তু মহাকাশে সম্প্রতি স্যাটেলাইট বাণিজ্য এতো বেড়েছে যে, নষ্ট হয়ে যাওয়া স্যাটেলাইটগুলো তৈরি করছে মহাকাশ বর্জ্য। যা ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে মহাকাশে স্যাটেলাইটের নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর