শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি
0

চামড়া শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা প্রস্তাব

চামড়া শিল্পের শ্রমিকদের খাদ্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনা করে ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই মজুরি দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশন। আর বাংলাদেশ ন্যূনতম মজুরি বোর্ড বলছে, দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই ন্যূনতম মজুরি ঠিক করবে সরকার।

তৈরি পোশাক খাতের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি পণ্য হিসেবে পরিচিত চামড়া শিল্প। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২২ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে সম্ভাবনাময় এই খাতকে আরও কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিতে চামড়া শিল্পের ভূমিকা আরও বেশি হতে পারতো। কিন্তু বেশিরভাগ ট্যানারি লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ বা এলডব্লিউজির সনদ না পাওয়াতে ইউরোপের মার্কেটে সরাসরি চামড়া বিক্রি করতে পারছে না বাংলাদেশ।

তবে দেশের অন্যান্য রপ্তানি শিল্পগুলোর যে বেতন কাঠামো তার চেয়ে অনেক ভালো বেতনেই কাজ করছে ট্যানারি শ্রমিকরা। তবে এই বেতন-ভাতা অন্যান্য যেকোন দেশের তুলনায় কম। সিপিডি'র তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ট্যানারি শ্রমিকদের যে বেতন দেয়া হয় তা ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার ট্যানারি শ্রমিকদের চেয়ে অনেক কম। তাই বর্তমান বাজারের কথা বিবেচনা করে ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

এদিকে ২০১১ সালে সর্বপ্রথম ট্যানারি শিল্পের জন্য ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার ৭৫০ টাকা ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালে সেটা বৃদ্ধি করে শহর অঞ্চলের জন্য ১৩ হাজার ৫০০ টাকা ও গ্রাম অঞ্চলের জন্য ১২ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করে। গবেষণা বলছে, ২০২৪ সালে এসেও ৬০ শতাংশ ট্যানারি এই বেতন দিচ্ছে না।

তবে করোনা মহামারি, ডলারের দাম বৃদ্ধি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে মন্দা সময় পার করছে ট্যানারি ব্যবসা, এমনটাই দাবি ট্যানারি মালিকদের। তারা বলছেন, যেখানে ২০১৮ সালে ১৮০ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। সেখানে বর্তমানে তা কমে গেছে প্রায় ৫০ কোটি ডলার। তাই ব্যবসায় ভালো না করা পর্যন্ত ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, ‘শিগগিরই ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হবে।’

এছাড়া গবেষণায় উঠে আসে, দেশের ৭১ শতাংশ ট্যানারি শ্রমিক তাদের ন্যূনতম মজুরি সম্পর্কে জানেনই না।