বাংলাদেশ ভারতসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল এলাকা তীব্র দাবদাহে পুড়ছে। গরমে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। অনেক অঞ্চলে দেখা দিয়েছে ভূ-গর্ভস্থ পানির সংকট। সেই সঙ্গে শঙ্কায় পড়েছে ফসল উৎপাদন।
এ বছর এপ্রিলে সবচেয়ে উষ্ণতম মাসের মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার। রোববার দেশটির ৫৬ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। একই দিন বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে ৪০ ডিগ্রি এবং মান্দালয় শহরের তাপমাত্রা ছিলো ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মাসে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
এদিকে দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন ২ জন। এছাড়া তামিলনাড়ু, চেন্নাই, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কিছু রাজ্যে তীব্র দাবদাহ বইছে। ফিলিপাইনে চলমান তাপপ্রবাহে ক্ষতির মুখে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। রাজধানী ম্যানিলাসহ বেশ কিছু শহরের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ জুড়ে চলা তাপপ্রবাহে বাংলাদেশেও আবহাওয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের জীবনে এতো গরম দেখিনি। গ্রীষ্মকালে গরমের মধ্যেও বৃষ্টি হয়, তবে এবার তা হচ্ছে না। আমাদের মতো মানুষ অনেক কষ্টে আছে। গরম আবহাওয়ায় চিড়িয়াখানার প্রাণীদের রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাঘের খাচার সামনে এয়ার কুলার স্থাপন করা হয়েছে। ফিলিপাইনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ অবস্থা থাকলে কেউ কোনো কাজ করতে পারবে না।
তামিলনাড়ুতে চরম তাপপ্রবাহের মধ্যে জনসাধারণের কাছে পর্যাপ্ত পানীয় জল বিতরণ করা হচ্ছে।
অসহনীয় গরমে বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশসহ ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের কয়েক হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে না পেরে বেশিরভাগ দেশে চলছে তীব্র লোডশেডিং।
গত এক মাসে থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন ৩০ জন। দেশটির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে নামছেই না। যার প্রভাব পড়েছে থাইল্যান্ডের পর্যটন খাতে। ভিয়েতনামে এসির শোরুমগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। টানা কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে মালয়েশিয়ার অন্তত ১৬টি অঞ্চল।