গতকাল (মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল) সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের সম্মানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন ও প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা।
১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা হাসপাতালে ঢুকে অপারেশন রুম থেকে ডা. শামসুদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজনকে বের করে হাসপাতালের ভেতরে গুলি করে হত্যা করে। তিন দিন পর কারফিউ শিথিল হলে কিছু মানুষ হাসপাতাল অঙ্গনেই তাকে কবর দেন।
এ গণহত্যায় নিহত সব শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার দাবি জানায় সিলেটে নাগরিক মৈত্রী নামের একটি সংগঠন।
এদিন তারা সব শহীদের সাথে বিশেষভাবে স্মরণ করেন ডা. শামসুদ্দিন আহমদকে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৪৬ সালে এমবিবিএস পাস করে শামসুদ্দিন ট্রেনিং গ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান হওয়ার পর প্রথমে কুমিল্লা ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক ও শিক্ষকতা শুরু করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
ডা. শামসুদ্দিন তখন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে চাকরির জন্য বদলি হতেন বারবার এবং ১৯৫৮ সালের দিকে বিলেতে গিয়ে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৬২ সালে রাজশাহীর নতুন মেডিকেল কলেজে যোগ দেন।
সিলেটে মেডিকেল কলেজে তখন অধ্যাপকের পদ না থাকায় তিনি ১৯৬৪ সালে সিভিল সার্জন হয়ে সিলেটে আসেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগেই ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ তৈরি করেছিলেন ইমার্জেন্সি টিম, ব্ল্যাড ব্যাংক। রক্তপাতের ঘটনা ঘটতে পারে, সে ব্যাপারে তিনি সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানি সৈন্যরা গণহত্যা শুরু করল, তখন অনেক চিকিৎসক যুদ্ধের ভয়াবহতায় শহর ছেড়ে চলে যান। অবশেষে ৯ এপ্রিল পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীদের হাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন শামসুদ্দীন।