গত মাসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মাইক্রোসফটের সহ প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস নয়াদিল্লিতে বৈঠক করেন। বৈঠকে কিভাবে এআই'কে সামাজিক, নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও উদ্ভাবনে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই মাইক্রোসফটের গোয়েন্দা দলের দাবি, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে বাধার মুখে ফেলবে চীন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশসহ অন্তত ৬৪টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস। মাইক্রোসফট গোয়েন্দা দলের দাবি, উত্তর কোরিয়ার সহযোগিতায় চীনের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সাইবার গ্রুপ এআই দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবে, যেখানে থাকবে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র, ভারত আর দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক। এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট বলছে, চীন নিজেদের স্বার্থে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করবে। ডিপফেক আর এমন বানোয়াট ঘটনা যা বাস্তবে ঘটেনি, সেই মিথ্যাচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হবে। যে কারণে সমর্থিত প্রার্থীকে নিয়ে জনগণ বিভ্রান্তিতে পড়ে যাবে।
যদিও এআই দিয়ে তৈরি কন্টেন্টের প্রভাব কম, এরপরও মাইক্রোসফটের সতর্কবার্তা, চীন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে এই প্রযুক্তিতে তৈরি কন্টেন্ট আরও গ্রহণযোগ্যতা পায়। টেক জায়ান্ট বলছে, চীন তাইওয়ানের নির্বাচনকে এভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলো। সেসময় বেইজিংয়ের গ্রুপ স্টর্ম ১৩৭৬ বা স্প্যামোফ্লগ সক্রিয় ছিলো। এই গ্রুপ এআই দিয়ে ভুয়া অনেক কন্টেন্ট তৈরি করে প্রচার করেছিলো। তাইওয়ানের ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির প্রার্থী উইলিয়াম লাইকে নিয়ে কার্টুন বানিয়ে প্রচার করেছিলো এই গ্রুপ। এর মধ্যে এআই দিয়ে তৈরি সংবাদ উপস্থাপকও ছিলো।
মাইক্রোসফট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়েও প্রভাবশালী ক্যাম্পেইন তৈরি করছে এই গ্রুপগুলো। এআই দিয়ে তৈরি কন্টেন্টের পরিমাণ এখন অনেক বেড়েছে। বিষয়বস্তুর মধ্যে আছে, কেন্টাকির ট্রেন লাইনচ্যুত, মাওউই'তে দাবানল, জাপানের পরমাণু কেন্দ্রের দূষিত পানি ছাড়, অভিবাসন নীতি। শুধু এতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না গ্রুপগুলো। নির্বাচনের আগে জো বাইডেনের কণ্ঠ অনুকরণ করে ভোটারদের ভোট দিতে নিষেধ করা হবে। এই বার্তা শুনে অনেক ভোটারই ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।
আগামী ১৯ এপ্রিল ভারতে সাধারণ নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে। ৪ জুন ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ভারতের নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে ভুল ও মিথ্যা তথ্য নিয়ে কিভাবে কাজ করতে হবে সে বিষয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। গত মাসেও ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওপেন এআই ও চ্যাটজিপিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিষয়বস্তু ছিলো নির্বাচনকে সামনে রেখে এআই'এর অপব্যবহার রোধে কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।