দেশে এখন
0

ভোলার ২ লাখ জেলে পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ

ঈদের বাকি আর ক'দিন। তবে এখনও আনন্দের ছোঁয়া লাগেনি ভোলার দুই লাখ জেলে পরিবারে। নদীতে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞায় কর্মহীন জেলেরা। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তিনবেলার আহার যোগানো। জেলেদের অভিযোগ, সরকারের সহায়তার চাল বিতরণে অনিয়মে জড়িত জনপ্রতিনিধিরা।

ভোলার ঘাটগুলোতে নোঙর করা ছোট-বড় নৌকা ও ট্রলার। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে মার্চ-এপ্রিলের নিষেধাজ্ঞা। কর্মহীন ১২৫টি মাছ ঘাটের মাঝি-মাল্লার। জেলার দুই লাখ জেলের কাছে অনেকটাই বর্ণহীন এবারের ঈদ।

তারা বলছেন, দীর্ঘদিন আয় না থাকায় কষ্টে আছে জেলে পরিবারগুলো। মহাজনেরা ঋণ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক আগেই, এনজিও ঋণও বন্ধ। তাই এবারের ঈদের পরিবারের জন্য নেই কোনো আয়োজন।

জেলেরা বলেন, নদীতে যাইতে পারি না। ধারদেনা করে চলতেছি। সামনে ঈদ আসতেছে পোলাপানরে কাপড় কিনে দেয়ার মতো উপায় নাই। ভাত খাওয়ানোর অবস্থাও নাই। ক্যামনে কী করবাম আল্লাহ ভালো জানেন।

জেলেদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারের পক্ষ থেকে নিবন্ধিত সাড়ে ৮৯ হাজার জেলের জন্য মাথাপিছু ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ থাকলেও দেয়া হচ্ছে কম। নিষেধাজ্ঞার একমাস পার হলেও অধিকাংশ ইউনিয়নে শুরু হয়নি চাল বিতরণ। রয়েছে অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ।

নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে জেলেরা। ছবি: এখন টিভি

যদিও এসব অনিয়মের কথা অস্বীকার করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, নিয়ম মেনেই বিতরণ করা হচ্ছে সহায়তার চাল। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় কম চাল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে বলেও দাবি তাদের।

চরপাতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাই বলেন, 'সবাই এটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছে যে চাল কেন পায় নাই। কিন্তু সরকার সম্পূর্ণ বরাদ্দ সরকার আমাকে দেয় নাই।'

যখন ঈদ উৎসবের পরিবর্তে সংসার চালাতেই হিমশিম অবস্থা জেলে পরিবারের। এ অবস্থায় অনিবন্ধিত জেলেদের নিবন্ধনের আওতায় এনে বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের দাবি করেন ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এরশাদ ফরাজি।

তিনি বলেন, 'অনেক জেলে এখনো চাল পায় নাই। আমি সরকারের কাছে দাবি করবো এ ঈদ উপলক্ষে তাদের জন্য কিছু করার জন্য। কারণ বিকল্প কর্মসংস্থানের ভিতরে জেলেদের আনা না হলে দিন অনেক কষ্টে যাবে।'

তবে চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জেলা মৎস্য বিভাগের। একইসঙ্গে ঈদের আগে জেলেদের সহায়তা চাল বিতরণের কথা জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা চাল উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। সেটা নিয়ে মামলাও করা হয়েছে। বাকি চাল বিতরণ শুরু করবো।'

ভোলায় নিবন্ধিত জেলে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৭৫ জন। এর বাইরেও নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে।