দেশে এখন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ঈদ স্পেশাল ট্রেন ৮ এপ্রিল থেকে

মনতোষ বেদজ্ঞ
কক্সবাজার

এই ঈদে প্রথমবারের মতো ট্রেনে চড়ে যাতায়াতের সুযোগ পাবেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ। যাত্রী সংখ্যা বাড়বে কক্সবাজারেও। কারণ আগামী ৮ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলবে 'ঈদ স্পেশাল' ট্রেন, যা বিরতি নেবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মাঝের ৮টি স্টেশনে।

কক্সবাজার রুটে বাণিজ্যিক ট্রেনের যাত্রা শুরু গত ১ ডিসেম্বর। তবে, বিপুল যাত্রী চাহিদা থাকলেও গত তিন মাস ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলছে মাত্র দু'টি ট্রেন। এছাড়া, এই পথে চলা কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস বিরতিহীন হওয়ায় দক্ষিণ দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের সুফল পুরোপুরি পাচ্ছেন চট্টগ্রামের যাত্রীরা। এমন প্রেক্ষাপটে এবারের ঈদযাত্রায় এই রুটে দুটি বিশেষ ট্রেন চালানোর স্বস্তির খবর নিয়ে এলো রেলওয়ে।

আগামী ৮ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ও ঈদের পরদিন হতে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এবং ১৭ ও ১৮ এপ্রিল এই পথে চলবে দুটি বিশেষ ট্রেন। যাত্রাপথে ট্রেনটি থামবে ৮টি স্টেশনে। আর প্রথমবার ট্রেনে চড়ে ঈদে বাড়ি যাতায়াতের সুযোগ পাবেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোকজন। এতে সড়ক পথে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপও কিছুটা কমবে।

কক্সবাজারের স্টেশনে প্রবেশ করছে ট্রেন। ছবি: এখন টিভি

কক্সবাজারের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী বলেন, 'কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন হওয়ায় পর এটা প্রথম ঈদ। আর এ প্রথম ঈদেই আমরা স্পেশাল ট্রেন পাচ্ছি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও কক্সবাজার-চট্টগ্রাম। এ দুইটা ঈদ স্পেশাল-৯ ও ১০ নামে চলাচল করবে।'

প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে গাড়ি সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া ও যানজটসহ নানা ভোগান্তি পেরিয়ে বাড়ি ফেরেন দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষ। তবে, কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসে চড়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ পান মাত্র ১১৫ জন। ঈদযাত্রায় সেটি আরও কয়েকগুণ বাড়বে। ১০ বগির ঈদ বিশেষ ট্রেনে যাত্রী হতে পারবেন আরও ৪২০ জন করে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল সাতটায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে পৌঁছাবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। আবার কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাতটায় ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে রাত ১০টা ৫ মিনিটে। পথে ট্রেনটি ষোলোশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে। এতে স্বস্তির ঈদযাত্রার আশা করছেন যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

একজন যাত্রী বলেন, 'আমরা যখন বাড়িতে যাই, তখন অনেকসময় টিকিট পাওয়া যায় না। নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সেখান থেকে আমরা পরিত্রাণ পাবো বলে আমরা মনে করি।'

নান্দনিক সুন্দর কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন। ছবি: এখন টিভি

এদিকে আগামী জুনের মধ্যেই ঢাকা-কক্সবাজার রুটে আরও ৩টি ট্রেন এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে কমিউটার ট্রেন চালুর আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজারের স্টেশন মাস্টার আরও বলেন, 'কমিউটার ট্রেন এবং আন্তঃনগর ট্রেন কক্সবাজার পর্যন্ত আরও তিনটি এক্সটেনশন হওয়ার সম্ভাবনা হয়েছে। এরমধ্যে মহানগর, তূর্ণা এবং চাঁদপুর থেকে মেঘনা ট্রেন কক্সবাজার পর্যন্ত এক্সটেন্ড হতে পারে।'

রেল কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগ পর্যটন শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এজন্য হোটেল-রেস্তোঁরাসহ পর্যটন খাতে জড়িতদের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার বলে জানালেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, 'ঈদের পর বড় ধরনের একটা চাপ আসবে। আমাদের ব্যবসায়ীরা যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হোটেল বা ট্যুরিজম শিল্পের সাথে জড়িত তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার।'

ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু আগামী ৩ এপ্রিল থেকে। এজন্য অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত ২৪ মার্চ থেকে। গতবারের মতো এবারও ঈদযাত্রার কোনো টিকেট কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে না, শতভাগ টিকিট মিলবে অনলাইনে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর