প্রতি বছরই ভুট্টা আবাদে শীর্ষে থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা। এবারও মাঠজুড়ে চাষ হয়েছে ভুট্টার। আর ক'দিন বাদেই এ ফসল ঘরে তোলার কথা ছিল কৃষকের। তবে কৃষকের সেই স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়েছে ফিউজারিয়াম স্টক রট নামে ভাইরাসের আক্রমণে।
জেলায় এবার ৪৯ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে ভুট্টা। তবে ভাইরাসের কারণে এখন অনেক খেত ধারণ করেছে বিবর্ণ রঙ। ধূসর শুকনো গাছে নেই ভুট্টার দেখা। সময়ের সাথে ভাইরাস ছড়াচ্ছে এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গাছ কেটে ফেলছেন ক্ষুব্ধ চাষিরা।
কৃষকরা বলেন, 'গেলবার অল্প দেখা দিয়েছিল ভাইরাস কিন্তু এবার সেচ দেওয়ার পর সব মাঠ ছড়িয়ে পড়েছে।''
আরেকজন বলেন, 'আমাদের এখন পাঁচ মণ করেও ভুট্টা হচ্ছে না। খরচও উঠবে না মনে হচ্ছে।'
এবার ভাইরাসের আক্রমণ ভেঙেছে অতীতের সব রেকর্ড। কীটনাশক ও ওষুধ স্প্রে করেও মেলেনি প্রতিকার। এর কারণে প্রতি বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। অভিযোগ, এমন সংকটের সময়ে মাঠে দেখা মিলছে না কৃষি কর্মকর্তাদের।
যদিও কৃষি বিভাগের দাবি, এ বছর ২২ হেক্টর জমিতে দেখা মিলেছে ভাইরাসজনিত এ রোগের। এ থেকে বাঁচতে ভুট্টাচাষিদের নানাভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এজন্য কৃষকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কায়ছার ইকবাল বলেন, 'কৃষকদের সাথে যখনই আমাদের যোগাযোগ হয় তাদেরকে এই বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। এই রোগটা আসলে নতুন একেবারে আগের তা কিন্তু নয়। গত দুই তিন বছর যাবত প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।'
গেল বছরও একই সমস্যায় পড়েছিলেন বেশ কিছু চাষি। এবার মাত্রা আরও বাড়ায় চাষিদের কাছে আতঙ্কের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ। এদিকে, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে ফসল উৎপাদন হলেও এ রোগের কারণে এখন নিঃস্ব অনেক কৃষক।