ন্যাটো সদস্যভুক্ত কোন দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠালে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হবে। রাশিয়ার কাছে এমন অস্ত্র আছে, যা সরাসরি পশ্চিমা ভূখণ্ডে হামলা করতে সক্ষম। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে সরাসরি এই হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পশ্চিমাদের বুঝতে হবে, রাশিয়ার কাছে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে সক্ষম সমরাস্ত্র আছে। ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা পাঠালে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হবে, মানব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ঘণ্টার বেশি সময়ের ভাষণে সরাসরি পশ্চিমা বিশ্বকে এই হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রাশিয়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করছে। আর পশ্চিমারা রাশিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। সারাবিশ্বে সংঘাত লাগিয়ে রাখা পশ্চিমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বলেও আক্ষেপ করেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, মস্কোকে আলোচনায় ডাকার পেছনে পশ্চিমাদের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে চুক্তিতে আসতে চায় ওয়াশিংটন। তার অভিযোগ, এমন কোন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বসবে না, যে ইস্যুতে কোন লাভ নেই।
পুতিন বলেন, ইউরোপে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ রাশিয়া। খুব দ্রুত জাপানকে পেছনে ফেলবে মস্কো। এদিকে কিনঝাল, জিরকন, সারমাট হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আর অ্যাভানগার্ড গ্লাইডার যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করছে। অর পরমাণু অস্ত্র সংবলিত কয়েকটি সমরাস্ত্র পরীক্ষার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলেও তিনি জানান।
যদিও পুতিনের এতো প্রতিক্রিয়া আর ন্যাটো সদস্যভুক্ত অন্যান্য দেশের কড়া সমালোচনার পরও নিজের বক্তব্যে অনড় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তিনি বলেন, ইউক্রেনের ইস্যু অনেক বেশি গুরুতর, যা বিবেচনা করেই বক্তব্য দেয়া হয়েছে। সোমবার প্যারিসে ইউরোপীয়ান নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, প্রয়োজনে ন্যাটো থেকে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি
এদিকে পশ্চিমা বিশ্বকে পুতিনের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সতর্ক থাকতে বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউরোপের দেশগুলোর এক সম্মেলনে তিনি বলেন, শুধু ইউক্রেনের জন্য নয়, এখন বলকান রাষ্ট্রগুলোর জন্যও রাশিয়া হুমকি। ইউক্রেন-বলকান প্রতিরক্ষা ফোরামেরও দাবি জানান জেলেনস্কি।
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে পুতিন আরও বলেন, পশ্চিমারা নিজেদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিজেরাই ধ্বংস করেছে। নিজেদের মুদ্রা আর ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
এর আগে মুদ্রাবাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, ডলারকে আর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না পশ্চিমা বিশ্ব। ইতোমধ্যে অনেক দেশ ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ফেলেছে।