রাজশাহী সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. রাকিবুল হাসান রোহানের ছোটবেলা থেকেই গাছের প্রতি ভালোবাসা ছিল । শখ ছিল নার্সারি গড়ে তোলার। করোনাকালে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে শখকে পূর্ণতা দিতেই অন্যের বাসার ছাদ ভাড়া নিয়ে শুরু করেন ছাদবাগান। পরে ধীরে ধীরে বাড়িয়েছেন বাগানের পরিধি। স্বল্প পরিসরে শুরু করলেও এখন তার ছাদবাগানে আছে দেশি-বিদেশি জাতের ১৫০ রঙয়ের বাগানবিলাসসহ ফলজ, বনজ, ওষুধি ও শোভাবর্ধনকারী বাহারি ফুলের গাছ।
বাগানের পরিচর্যা করছেন রাকিবুল হাসান। ছবি: এখন টিভি
পড়াশোনার পাশাপাশি রোহান সময় দেন ছাদবাগানের পরিচর্চায়। গাছের চারা করার কাজও নিজ হাতে করেন। এছাড়া তিনি একটি নার্সারির সাথেও যুক্ত আছেন। নার্সারি ও অনলাইন প্লাটফর্মেও রয়েছে তার গাছের ভালো চাহিদা। সব মিলিয়ে মাসে বেচাকেনা হয় ৭০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকার গাছ।
রোহান বলেন, 'আমার বন্ধুরা অনেকে আগ্রহী হচ্ছে এটা শিখার জন্য। তারা বলছে চাকরি তো আশা করা যায় না কখন কীভাবে হয়। সেখানে এটা একটা নিশ্চিত ভবিষ্যত। এক সময় কাজে লাগবে এটা।'
শুধু রোহনই নয়, বর্তমানে রাজশাহীতে এমন ছাদবাগানীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। দিনে দিনে বাড়ছে ছাদবাগানে আগ্রহীদের সংখ্যা। কেউ শখে আবার কেউ বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে বাড়ির ছাদেই স্বল্পপুঁজিতে গড়ে তুলছেন বাগান। আর তা থেকে আয় করছেন লাখ টাকা। সেই সাথে এতে কাজের সুযোগ মিলছে আরও অনেক পরিবারের।
একজন নার্সারী ব্যবসায়ী বলেন, 'মাত্র দেড় লাখ টাকা দিয়ে নার্সারি শুরু করেছিলাম। এখন আরও একটা নার্সারি আছে, সাথে একটা ছাদবাগান আছে।'
রাজশাহী শহরের বাসিন্দাদের জন্য নার্সারি মালিকদের সহযোগিতায় নগরীর গ্রিন প্লাজায় আয়োজন করা হয়েছে মাসব্যাপী পুষ্প প্রদর্শনী মেলার। যেখানে স্থানীয় নার্সারি মালিকরা তাদের দেশি-বিদেশি জাতের বাহারি ফলজ, বনজ ও ফুল গাছের প্রদর্শনী ও বিক্রি করছেন। প্রতিদিন একেকটি স্টলে বিক্রি হয় ৫ থেকে ১২ হাজার টাকার গাছ। এরমধ্যে বাহারি জাতের সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস, এরিকা পামের মতো ইনডোর প্ল্যান্টের ক্রেতা চাহিদা বেশি।
প্রতিদিন মেলার এসব গাছের স্টলে ভিড় করছেন নানা বয়সী গাছপ্রেমী মানুষ। নগরজীবনে খানিকটা সজীবতা পেতে বিভিন্ন স্টল ঘুরে কিনছেন নিজেদের পছন্দসই গাছ।
কৃষি বিপ্লবের মতো আগামীতে ছাদবাগানও দেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।