দেশে এখন
0

রাজধানীতে বেপরোয়া লাইসেন্সহীন ব্যাটারিচালিত রিকশা

ব্যাটারিচালিত রিকশার কোন অনুমোদন নেই। চালকদেরও নেই কোন প্রশিক্ষণ। তবুও তাদেরকে ফেলা যাচ্ছে না সিটি কর্পোরেশনের অযান্ত্রিক পরিবহনের কোটায়। দুই সিটি কর্পোরেশনের নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কিভাবে রাজধানীতে চলছে বেপরোয়া গতির এই পরিবহন?

তিন চাকার রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে ২৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটার গতিতে শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি পরিবহন। খুব বেশি কষ্ট নেই চালাতে। তাই রিকশা চালকদের আগ্রহ বাড়ছে এই পরিবহনের প্রতি।

রিকশা চালকরা বলেন, 'ভোর ৬টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত চালানো যায়। প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা কামানো যায়।'

রাজধানীর এখন প্রায় সব জায়গায় দেখা মেলে ব্যাটারি চালিত রিকশার। তবে চালকদের ভয় শুধু পুলিশ।

রিকশা চালকরা আরও বলেন, 'পুলিশ ধরলে ১২০০ টাকা ডাম্পিং। কোন রশিদ দেয় না; টাকা নিয়া ছাউড়া দেয়। গাড়ি ধরে সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী কিছু করে না। উল্টা টাকা নিয়া গাড়ি ছাইড়া দেয়।'

পুলিশের পাশাপাশি রাজধানীর কোন কোন এলাকায় এই রিকশার নিয়ন্ত্রণ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হাতে।

প্রভাবশালীদের চাঁদার টাকা না দিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হয় চালক ও গ্যারেজ মালিকদের। বলেন, 'গাড়ি প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে চাঁদা নেয়। না দিলে মারধর করে, গাড়ির তার কেটে দেয়।'

পরিকল্পিত নগরী গড়তে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। এর সুফলও পাচ্ছে জনগণ। তবে এই ধরনের পরিবহন পরিকল্পিত নগরায়ণের প্রধান অন্তরায় বলছে শহর পরিকল্পনাবিদরা।

নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, 'যারা চাঁদা নিচ্ছেন আর যারা দিচ্ছেন তাদের যোগসাজশে দুর্বৃত্তায়নের সৃষ্টি হচ্ছে। এটি অনিরাপদ, ভয়ংকর ও বিপদজনক। অবশ্যই এটা অপসারণ করতে হবে।'

সব জানে দুই সিটি কর্পোরেশন। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মধ্যেই তাদের কর্যক্রম সীমাবদ্ধ।

দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, 'ব্যাটারি চালিত যানবাহনের জন্য আমরা অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ছি। এ কারণেই আমরা মূল পয়েন্টগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। সবাইকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।'

উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, 'স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সবকিছুই স্মার্ট হতে হবে। ইজিবাইক যারা চালায় তাদের কোন লাইসেন্স নেই।'

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করা এই রিকশার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে এটাই এখন বড় প্রশ্ন? শুধু অভিযান চালিয়ে অবৈধ রিকশার দাপট বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য নগর পরিকল্পনাবিদদের। দরকার কঠোর পদক্ষেপ।