ছুটির দিনের বইমেলা মানে শিশুপ্রহরের বাহারি আয়োজন। বাড়তি আগ্রহের কারণে একই দিনে তিনবার দেখা দিতে হয় ইকরি-হালুম-টুকটুকিকে।
ক্লাসরুমের পাশে বইমেলা! হয়তো একটু ব্যাতিক্রম শোনাচ্ছে। মেলায় অনেক ধরনের বই পাওয়া যায়। তবে লেখা থেকে শুরু করে বই তৈরির সব কাজ করা লেখক নিজের হাতে করেন। মনের অনুভূতিকে বর্ণের গাঁথুনি ছাড়াও মন মতো দৃশ্যায়নে প্রচ্ছদ করেন লেখক স্বয়ং।
ব্যতিক্রমী এতো আয়োজন করে নিজের হাতে তৈরি বই নিয়েই হাজির হয়েছিল নালন্দা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যেখানে প্রজাপতি, বন্ধুত্ব, ফাল্গুন নিয়ে রঙিন সব বইয়ের সমাহার আছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'নিজের হাতে বই বানানোতে একটা আলাদা রকম মজা কাজ করে। যেহেতু নিজেদের লেখার একটা জায়গা তৈরি হচ্ছে তাই আমরাও আমাদের ভাবনাগুলো সবাইকে জানাতে পারছি।'
বই কেনা মূল বিষয় নয়, শিশুরা যেন বই স্পর্শ করে এটাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। শিশুদের হাতে তৈরি বই শিশুদের সাহসিকতার প্রমাণ দেয়।
কৈশোর-তারুণ্যে বইয়ের সভাপতি তুষার আবদুল্লাহ বলেন, 'শিক্ষার্থীরা নিজের হাতে বই তৈরি করে নিয়ে এসেছে। তারা যে ভাবনা নিয়ে বইগুলো লিখেছে, সাধারণত অনেক লেখক এবং প্রকাশকরাও এমন সাহস দেখাতে পারে না। আমাদের শিশুদের হাতে তৈরি বই প্রমাণ করে যে তারা দুঃসাহসী।'
এছাড়া সিসিমপুরের আয়োজনে বইমেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠে। যেন প্রিয় চরিত্রের সঙ্গে আনন্দের ভুবন দেখতে চায় শিশুরা। সফরসঙ্গী ছিলেন বাবা-মাসহ শিশুতোষ বইয়ের লেখক। অভিভাবকদের এক মোক্ষম সুযোগ, জিডিটাল ডিভাইসের ব্যবহার থেকে শিশুদের দূরে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে।
অভিভাবকরা বলেন, 'বই যুগের সাথে যুগের সংযোগ ঘটায়। আমরা চাই আধুনিক সমাজের শিশুদেরকে গ্রাম বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে, বইয়ের কোন বিকল্প নাই।'
টুকটুকি, ইকরি, হালুমের নাচে শিশু চত্বর মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। ছোটোদের উচ্ছ্বাস বড়রা উপভোগ করেন। শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অভিভাবকরা খুশি। এ ধরনের আয়োজন শিশুদের অনলাইননির্ভর বিনোদন থেকে সরিয়ে সামাজিকতা শেখাতে ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।