ভালোবাসা নিজের মতো করে নিজের অনুভূতি দিয়ে নানা ভাব নিয়ে ব্যক্ত হয়েছে- কখনো দেশের প্রতি, দ্রোহের প্রতি, প্রেমের প্রতি, সম্পর্কের প্রতি জাগরণের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে এগিয়েছে মানব ইতিহাস।
ভালোবাসার চিরন্তন কোনও রূপ আছে কি ? কেউ বলে ধরণ পাল্টে যায় কিন্তু ভালোবাসা তো ভালোবাসাই। মুস্তাকিম-জেবা নামের এক দম্পতি একই শিউলি গাছের নিচে কাটিয়েছেন ২৭টি বসন্ত। ভালোবাসায় পড়েনি বিন্দুমাত্র ছেদ, সাথে বাধা হয়নি নিজেদের চাওয়া পাওয়া । দিনশেষে সবই মিলিয়েছেন এক বিন্ধুতে।
মুস্তাকিম বলেন, 'মেয়ের পরিবার আমার বিষয়ে তদন্ত করে জানলো যে আমি মাত্র দেড় হাজার টাকা বেতন পাই। তাহলে তাদের মেয়েকে কিভাবে সুখে রাখবো। তারা অনেক আপত্তি করেন। তারপর তারা বললো ছেলে-মেয়ে রাজি থাকলে বলার কিছু নেই।'
যুগের সাথে ভালোবাসার হিসেবে নাকি এসেছে চৈত্রের খরতাপ অনেকেই ভাবেন এমন, কিন্তু আসলেই কি তাই? যুগের সাথে কি ভালোবাসার রঙ ফিঁকে হয়ে গেছে? পাল্টে যায় নাকি ভালোবাসার অংক?
মুস্কাকিম-জেবা দম্পত্তি
উত্তর জানতে সন্ধান মিললো নতুন যুগের এক দম্পতির। ভালোবাসার অমরাবতীতে কর্মজীবী দম্পতি ঈশিতা-আলালের পথচলা ৫ বছরের। নিজেদের কর্মজীবন, ভবিষ্যৎ ও পরিবার নিয়ে চোখের ভাষা পড়তে পড়তে দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছেন জীবন। একে অন্যের ভরসা হয়ে সামলে নিচ্ছেন সব হিসেব।
আলাল বলেন, 'আমারা একে অপরের সাথে মানিয়ে নিতে পারি। কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় ঢাকার বাইরে যেতে হয়। আমরা একে অন্যকে প্রাধান্য দেই।'
ঈশিতা বলেন, 'প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর আগে আমি জানতাম না সে কেমন। যখন আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ছিলো নিজে কিছু করতে পারবো তখন আর কিছু ভাবিনি। ভালোবাসা কখনো হিসেব-নিকেশ করে হয় না।'
ভালোবাসলে নাকি লাগে না ক্ষুধা। আবার কেউ অপ্রাপ্তি নিয়ে বেঁচে থেকে মিটিয়ে দিতে চায় দুরত্ব পরের জন্মের জন্য। আসলে মানব জীবনের এই ছোট্ট সময়কালে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে ভালোবাসা হয়ে যায় সরল অংক। যা দিয়ে কাটিয়ে দেয়া যায় গোটা জীবন এমনটাই মনে করেন সাহিত্যিক কিঙ্কর আহসান। বলেন, 'আমরা ভালোবাসতে এসে নিজের জায়গা শক্ত হয়ে বসে আছি, আমরা ছাড় দিতে চাই না। দুই দিক থেকেই সহনশীলতা লাগবে।'
তমাল তরুর চাঁপা-লতার মতো জড়িয়ে আছে সমাজে ভালোবাসার গল্প। ভালোবাসায় জড়ানো এই পৃথিবীতে যত কঠিন খরগই নেমে আসুক, ভালোবাসা রয়ে গেছে সেই মহীরুহ রূপেই।
এই সুর চায় তোমাকে, আমাকেও চাই তার, আমাদের মনে রঙ মিলে যাক দুনিয়ায় - কবির সুমনের এই গানের লাইন ভালোবাসার সব অর্থ ব্যক্ত করে দেয় । মানব জীবনের অনেক অংক না মিললেও দিনশেষে ভালোবাসার অংক কিন্তু মিলতেই হয়। যা নিয়ে জিইয়ে থাকে মনের ভেতরের বনফুল।