দেশে এখন
স্বাস্থ্য
0

পৌনে চার কোটি টাকার বার্ন ইউনিট এখন 'স্টোর রুম'

নতুন ভবনে পার হবার চার বছরেও 'বার্ন ইউনিট' চালু করতে পারেনি বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল। অথচ এই ইউনিটের পেছনে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

১০ শয্যার বার্ন ইউনিটে আছে অপারেশন থিয়েটারসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। রোগীদের বিছানাপত্র যন্ত্রপাতি সব খালি পড়ে আছে। পৌনে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অবকাঠামো হস্তান্তর করা হয় ২০২১ সালে।

প্রায় চার বছর পার হলেও চালু করা যায়নি এই বার্ন ইউনিট। কখনো করোনা আবার কখনো ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার হলেও এখন স্টোররুম হিসেবে ব্যবহার করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়রা বলেন, 'এখানে কোন ডাক্তার নেই, নার্স নেই। রোগীরা এসে ফিরে যায়। আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম যে, বগুড়াসহ আশেপাশের মানুষ এখানে চিকিৎসাসেবা পাবেন। বগুড়াতে শীতকালে যথেষ্ট অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বার্ন ইউনিট থাকা সত্ত্বেও দগ্ধদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।'

বার্ন ইউনিটটিকে স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

অথচ শুধু বগুড়া নয়, চালু হলে এই বার্ন ইউনিট থেকে উপকৃত হবে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলার পোড়া রোগী। যাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় যেতে হবে না। সময় ও অর্থের সাথে কমে আসবে পোড়া রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি। এজন্য প্রয়োজনীয় জনবল আর কিছু যন্ত্রপাতি দরকার বলছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সামির হোসেন মিশু। বলেন, 'অত্যাধুনিক কোন চিকিৎসাসেবা চালু করতে গেলে দক্ষ জনবল এবং তাদেরকে প্রশিক্ষিত করে শুরু করতে হয়। কারণ মানুষ যদি সঠিক চিকিৎসা না পায় তাহলে আরও দুর্দশা হবে। এখন মানুষের ঢাকায় যেতে হয় কিন্তু বগুড়াতে করতে পারলে আশেপাশের কয়েকটি জেলা উপকৃত হবে বলে মনে করি।'

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বার্ন ইউনিটের কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ভবন স্থানান্তর করা হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। জনবলের অভাবে চালু হয়নি বার্ন ইউনিট। সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালটেন্ট, সেবিকাসহ ৬৩ জন জনবলের জন্য আবেদন করেও কোন সাড়া মেলেনি।

মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, 'এখানে কমপক্ষে ৫ জন চিকিৎসক প্রয়োজন। পাশাপাশি এনেসথেশিয়া এবং আইসিইউতে পারদর্শী আরও ১০ জন লোক দরকার। আবার বার্ন ইউনিটের জন্য বিশেষ কিছু সরঞ্জাম দরকার। তবে প্রথমতো লোকবল দরকার, কারণ এটা হলেই বাকিগুলো যোগাড় করতে পারবো।'

এদিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও বিশেষায়িত কোন বার্ন ইউনিট নেই। সার্জারি বিভাগের একটি অংশে পোড়া রোগীদের সেবা দেয়া হলেও বিশেষায়িত চিকিৎসক ও সরঞ্জাম না থাকায় ঝুঁকিপুর্ণ রোগীদের স্থানান্তর করা হয় ঢাকায়।