ব্রেক্সিটের কারণে ব্রিটেন ছেড়ে গেছে ইউরোপীয় মালিকানাধীন প্রায় ৪৪ শতাংশ বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ইউরোপের সিঙ্গেল মার্কেট ছাড়ার কারণে ব্রিটেনের বাজারে প্রতিনিয়তই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ছোট হয়ে এসেছে ব্রিটেনের অর্থনীতি।
চলতি মাস থেকে ব্রিটিশ ব্যাবসায়ীদের জন্য ইউরোপ থেকে পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি ঝামেলা যুক্ত হয়েছে। এরসঙ্গে বেড়েছে খরচও। কাস্টমস ফি হিসেবে নতুন করে আরোপ করা হয়েছে প্রায় ৩শ' মিলিয়ন পাউন্ড। যাতে দুই তৃতীয়াংশ ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত খাবার ও ফুল আমদানিতে লাগবে এই কাস্টমস হেলথ সার্টিফিকেট।
ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসায় ব্রিটেনের অর্থনীতিতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪০ বিলিয়ন পাউন্ড। শুধুমাত্র লন্ডনের অর্থনীতিতেই ব্রেক্সিটের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ বিলিয়ন পাউন্ড। সম্প্রতি লন্ডন সিটি হলের এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ব্রেক্সিটের পরে চাকরির পরিমাণও কমেছে ব্রিটেনে।
ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মুশফিক উদ্দিন জানান, 'আশঙ্কাজনক হারে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। অনেক বিনিয়োগ ব্রিটেন থেকে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে যাচ্ছে। এবং সীমান্তে বিভিন্ন ধরনের বাধার কারণে ব্রিটেনে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে।'
ব্রিটেনে বসবাসরত অনেকেই মনে করেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে দায় রয়েছে ব্রেক্সিটের। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষের বাৎসরিক সঞ্চয়ের পরিমাণও কমেছে। কেবল ২০২৩ সালেই ব্রিটিশদের গড়ে প্রায় বাড়তি দুই হাজার পাউন্ড বেশি খরচ করতে হয়েছে।
ব্রিটেন প্রবাসী বাংলাদেশি টুটুল হোসাইন জানান, 'যেসব পণ্য ইউরোপের বাজার থেকে আসতো বর্তমানে ব্রেক্সিটের ফলে আমরা সেই পণ্যগুলো আগের মত পাই না।'
ব্রেক্সিটের ফলে ব্রিটেনে চাকরির সুযোগ কমেছে। শুধুমাত্র লন্ডনেই প্রায় ৩ লাখ চাকরি আগের তুলনায় কম রয়েছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, ৫৬ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক মনে করেন ব্যর্থ হয়েছে ব্রেক্সিট।