ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ হচ্ছে অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণ কাজের জন্য। গবেষণা বলছে বায়ু দূষণের জন্য নির্মাণখাত ৩০ শতাংশ দায়ী। নানা দূষণে জর্জরিত এ নগরীতে গ্রীষ্ম বা বর্ষাকালে বায়ুর গ্রহণযোগ্যতার মান কখনও কখনও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় থাকলেও শীতকালে এই মান একেবারেই কমে যায়। এবারেও তার ব্যাতিক্রম নয়।
ধোলাইখাল এলাকায় একজন ব্যবসায়ীর বাসা। ছবি: এখন টিভি
রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় রাস্তার পাশেই ব্যবসায়ীদের বাসাবাড়ি। এই এলাকায় ধুলার পরিধি আসলে কতদূর বিস্তৃত তা দেখতে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বাসায় যায় এখন টেলিভিশন। দিনের বেলাতেও বাড়ির জানালা বন্ধ করে রাখা হয়। তবুও যেখানেই হাত পড়ে তা ধুলায় মলিন হয়ে যায়।
বাড়ির মালিক বলেন, 'এখানে এত পরিমাণ ধুলা প্রতিদিন আট থেকে দশবার ঝাড়ু দিতে হয়। ধুলার কারণে দরজা জানালা লাগিয়ে রাখতে হয়। বাচ্চারা বের হতে পারে না। ধুলা সহ্য করতে না পেরে এলার্জি হয়েছে বাচ্চাদের।'
স্থানীয়রা জানালেন, বেশ কয়েক বছর ধরে রাস্তা ভাঙা। ফলে বারোমাস তারা ধুলার সমস্যায় ভুগছেন। অনেকে জানান, ধুলার কারণে তাদের সন্তানরা শ্বাসযন্ত্রের নানা অসুখে ভুগছে।
রাস্তায় ধুলা বেশি থাকায় পানি ছিটাচ্ছেন স্থানীয় এক যুবক। ছবি: এখন টিভি
ধোলাইখাল এলাকার রাস্তাটি আগেই থেকে খারাপ থাকলেও এক বছর ধরে রাস্তাটি চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়িক নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম পুরান ঢাকায় সড়কটি এখন জনগণের ভোগান্তির মূল কারণ।
এদিকে, ধুলায় বায়ু দূষণের কারণে নানা দুর্ভোগের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অর্থনীতিতেও এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'দূষণজনিত কারণে মানুষ অসুস্থ হলে তার কর্মঘণ্টা ব্যাহত হয়। তার ওষুধ কেনার জন্য অতিরিক্ত খরচ হয়। অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার জন্য পরিবারের অন্যদের কর্মঘণ্টাও নষ্ট হয়। চিকিৎসা খরচ এবং কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ায় দু'টি মিলে অর্থনীতির উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়।'
এমন অবস্থায় কবে নাগাদ এ রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু হবে তা জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে ধোলাইখাল রাস্তার প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা চলছে। আর একটি ধাপ পার হলেই শুরু হবে টেন্ডার অহ্বানের কাজ।
ডিএসসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, 'যেহেতু রাস্তাটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেজন্য সে রাস্তায় আমাদের নিয়মিত মেরামত কাজ চলছে। এ সিজনে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব এ বছরের জুনের আগে অর্থাৎ আগামী অর্থবছরের আগে যেন এ কাজ শেষ করে দিতে পারি।'
যদিও ধোলাইখাল সড়ক নিয়ে কাগজে কলমে কাজ বহুদূর এগিয়েছে জানালেও দৃশ্যমানভাবে কবে নাগাদ রাস্তার কাজ শুরু হবে সে বিষয়ে কিছুই স্পষ্ট করতে পারেনি ডিএসসিসি।