দেশে এখন
0

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর তাতেই মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মূল আনন্দের শিকড় খুঁজে পেয়েছিলো বাঙালি জাতি। প্রিয় মাতৃভূমিতে পা ফেলেই আবেগ আপ্লুত বঙ্গবন্ধু আহবান জানিয়েছেন উৎপাদনমুখী দেশ গঠনে।

তেজগাঁও বিমানবন্দরে লাখো মানুষের ঢলই বলে দিয়েছিল প্রিয় দেশ, তার মানুষ ও নেতার অকৃত্রিম বন্ধনের কথা। বঙ্গবন্ধুকে একনজর দেখার জন্য জনতার বাঁধভাঙা উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছিলো সদ্য স্বাধীন দেশের রাজধানীজুড়ে।

৮ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডন ও দিল্লী হয়ে দেশে ফেরেন তখন ১০ তারিখ দুপুর। বাংলাদেশের স্থপতিকে বহনকারী বিমান রানওয়ের মাটি স্পর্শ করতেই শুরু হয়েছিল লাখো মানুষের গগনবিদারী স্লোগান আর হর্ষধ্বনি।

দেশের মাটিতে পা রেখেই আবেগ আপ্লুত বঙ্গবন্ধু। পরিবার সন্তানের চেয়েও যার কাছে বড় দেশ, তিনি চলে গেলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ফের শোনা গেল বাঙালির সেই প্রিয় কণ্ঠ।

স্বাধীন মানচিত্রে দাঁড়িয়ে প্রথম বক্তব্যে দেশ গঠনের আহ্বান ছিল বঙ্গবন্ধুর। আবেগ আর ভালোবাসার জোরে ঘোষণা দিলেন, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি গঠনই হবে দ্বিতীয় বিপ্লব।

বঙ্গবন্ধুর সেদিনের আহবান বাঙালিকে নতুন পথের ঠিকানা দিয়েছিলো বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বলেন তার সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ের স্বপ্নের মোহনা ছিল ঐতিহাসিক দর্শন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, 'বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে গেছেন তা যেন আমরা পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি। বঙ্গবন্ধু ফিরে আসলেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি আর তখনই ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের মাহাত্ম পূর্ণতা লাভ করলো।'

সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু উৎপাদনমুখী ও টেকসই অর্থনীতির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। উন্নত শিক্ষিত জাতি গঠনের মূলমন্ত্র ছিলো তার শাসন ব্যবস্থায়, বঙ্গবন্ধুর শাসনকাল দীর্ঘ হলে দেশ এগিয়ে যেতো বহুদূর বলে দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক আতিউর রহমানের।

তিনি বলেন, 'কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেন, তারপর শিল্প আর শিক্ষা। মাত্র ৬ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিকে হাতে নিয়ে ১৯-২০ বিলিয়র ডলারে নিয়ে আসলেন। অর্থনীতির সঙ্কটের কারণে আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার যে লড়াকু মন দরকার তা বঙ্গবন্ধু দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু নিজেই একজন সামাজিক শক্তির প্রতিরূপ।'

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বড় ধরণের হোঁচট খায় জাতি। রাজনীতি চলে যায় বহুধারায়, পিছিয়ে যায় দেশ, অভিমত বিশ্লেষকদের।