৫৬ হাজার বর্গমাইলের লাল সবুজের বাংলাদেশ। পুরো মানচিত্রজুড়েই চলছে ভোট উৎসব। অপেক্ষায় রয়েছে দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটারসহ ১৭ কোটি মানুষ।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনের ব্যয় ছিল মাত্র ৮১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। পরের নির্বাচনের ব্যয় দুই কোটি টাকা। বাড়তে বাড়তে এখন তা প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোট ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। পরে তা আরও বেড়ে গিয়েছিল। এবারের নির্বাচনের ব্যয়, শুরুতে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বেড়ে দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এরমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় হতে পারে ১ হাজার ৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নির্বাচন কমিশনের নিরলস কর্মযজ্ঞ চূড়ান্ত পর্যায়ে। এখন শুধু ভোট অনুষ্ঠান আর ফলাফলের অপেক্ষা। বৈধ প্রার্থীর মৃত্যুতে নওগাঁ-২ আসনের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ২৯৯টি আসনে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হবে ৭ জানুয়ারি। সকাল ৮ টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
অব্যাহত নানা আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই বিএনপিসহ ১৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ভোট বর্জন করেছে। শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনাররা বলছেন, দেশের স্বার্থে একটি ভালো নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর তারা।
সবমিলিয়ে ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রের ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৫৬টি ভোটকক্ষের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ । আর এ মহাকর্মযজ্ঞে দায়িত্ব পালন করবেন প্রায় ৮ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা। কেন্দ্রের নিরাপত্তা আর সারাদেশের ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাঠে মোতায়েন রয়েছে।
এরমধ্যে ৬২ জেলায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকবে ৩৮ হাজার ১৫৪ জন সেনাবাহিনীর সদস্য। এবং ১৯টি জেলায় ২ হাজার ৮২৭ জন নৌবাহিনীর সদস্য। সারাদেশে মোতায়েন রয়েছে ১ হাজার ১৫১ প্লাটুন বিজিবি, সংখ্যায় যা ৪৪ হাজার ৯১২ জন। আর ৭০ প্লাটুনে কোস্টগার্ড সদস্য নিয়োজিত আছেন ২ হাজার ৩৫৫ জন।
এছাড়া রয়েছে র্যাবের ৬০০টি টহল টিম ও ৯৫টি রিজার্ভ টিম। নির্বাচনের মাঠে সবমিলিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৭ জন পুলিশ সদস্য ও ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮৮ জন আনসার সদস্য।
৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে ২৮ দল। সবমিলিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ২ হাজার ৭১৬জন। বাছাইয়ে বাদ পড়ে যায় ৭৩১ প্রার্থীর মনোনয়ন। আপিল ও আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে কয়েকজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়। এখন নির্বাচনের মাঠে আছেন ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী। এরমধ্যে বেশকিছু আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাপুটে অবস্থান চোখে পড়ার মতো।