মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ইরানে বোমা বিস্ফোরণ: ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে ইরান

ইরানে জোড়া বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ জনে। নিহতদের স্মরণে দেশটিতে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।

এই হামলার পেছনে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে ইরান। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, হামলায় ইসরাইলের হাত থাকার কোনো প্রমাণ নেই। এদিকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া, তুর্কিয়েসহ বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘ।

গত ৪২ বছরের মধ্যে ইরানে ভয়াবহ এই হামলার ঘটনা ঘটলো। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে আহত ২১১ জনের মধ্যে ২৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আছে মৃতের সংখ্যা বাড়ার শঙ্কা।

জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলেছেন কেরমান শহরের নিরাপত্তা প্রধান। যদিও হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। তবে সন্দেহের তীর আরব বিচ্ছিন্নতাবাদী ও আইএস-এর মতো গোষ্ঠীগুলোর দিকে। সম্প্রতি ইরানের বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেশ কয়েকটি হামলা চালায় তারা।

সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। এই কাপুরুষোচিত হামলার জন্য ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে দুষছেন তিনি। অতীতেও ইরান তার সীমানায় বিভিন্ন হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। তবে ইসরাইল কখনো সেগুলো নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, 'ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীকে সতর্ক করছি। এই জঘন্য অপরাধের মূল্য তাদেরকে দিতে হবে। শত্রুদের মনে রাখা উচিত, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে ইরানি জাতির মনোবলে ফাঁটল ধরাতে পারবে না। এই হামলার পেছনে ইহুদি গোষ্ঠী ও শত্রুপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের হাত আছে।'

তবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র বলেছেন, 'হামলার পেছনে ইসরায়েলের হাত ছিল এমন কোনো ইঙ্গিত বা প্রমাণ নেই। হতাহতদের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।'

হামলায় ইসরাইল জড়িত নয় জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, 'বিস্ফোরণের বিষয়ে আমাদের কাছে বিশদ কোনো তথ্য এখনো নেই। তাই হামলায় ইসরাইল কোনোভাবে জড়িত এ কথা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কী কারণে এবং কীভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে তা তদন্ত করে দায়ীদের খুঁজে বের করতে হবে।'

ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সুলাইমানি সবার কাছে বীর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আঞ্চলিক শত্রু আরব বিশ্ব ও ইসরাইলের মাথাব্যথার কারণ ছিলেন তিনি। ২০২০ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার আগে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর জনপ্রিয়তায় দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তিত্ব ছিলেন কাসেম সুলাইমানি।

বুধবার কাশেম সুলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে কেরমান শহরে তার সমাধিতে মানুষের ঢল নামে। সেখানেই ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দুটি বোমা বিস্ফোরণ হয়। প্রথম বিস্ফোরণটি কাসেমির সমাধি থেকে ৭০০ মিটার দূরে ছিল। দ্বিতীয়টি বিস্ফোরিত হয় ১ কিলোমিটার দূরে।

দুটি বিস্ফোরণই নিরাপত্তা চেকপোস্টের বাইরে হয়। তবে সেগুলো আত্মঘাতী ছিল কি না তা এখনও স্পষ্ট না। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বলছে, দুটি ব্রিফকেসে থাকা বোমাগুলো রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এই হামলাকে নিষ্ঠুর ও মর্মান্তিক বলে অভিহিত করেছেন।

এমএসএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর