২০২২ সালে ইউক্রেনে সেনা অভিযান শুরুর পরই রাশিয়া ঘোষণা দেয়, তাদের কাছেই সবচেয়ে আধুনিক পরমাণু অস্ত্র আছে। যেকোন আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে সক্ষম মস্কো। আগামী মেয়াদে ক্ষমতায় আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে আরও উত্তেজনা বাড়বে রাশিয়ার। কারণ দুই দেশ কি পরিমাণ পরমানু অস্ত্র মোতায়েন করতে পারবে, সেই চুক্তির মেয়াদও শেষের পথে।
সোমবার আরও দুটি নতুন পরমাণু সাবমেরিন প্রশান্ত মহাসাগরে মোতায়েনের ঘোষণা দেন পুতিন। এরমধ্যে একটি এমপেরর আলেক্সান্ডার, যেটি দিয়ে গত মাসেই পরমাণু হামলায় সক্ষম বুলাভা আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। যদিও পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা ব্যবহারে কোন চুক্তিতে আসতে রাজি নন পুতিন। উল্টো বেলারুশে কৌশলগত পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে মস্কো।
গেল মাসেই পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ করার বৈশ্বিক চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহারে স্বাক্ষর করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যদিও মস্কো জানায়, কোন ধরনের পরমানু অস্ত্র পরীক্ষা করবে না তারা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনে অভিযানে জটিলতার মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হওয়ায় পরমাণু অস্ত্র এখন পুতিনের বড় শক্তি।
পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোন আলোচনা করছে না ক্রেমলিন। পরমাণু হামলা আতঙ্কেই যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটো সদস্য দেশ ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে না। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আর ন্যাটোর সঙ্গে যেভাবে রাশিয়া খেলছে, তাতে ঝুঁকি কমার পরিবর্তে উল্টো বাড়ছে।
২০২৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার নিউ স্টার্ট ট্রিটি। এই চুক্তি অনুযায়ী, পরমাণু অস্ত্রের মজুতে সীমাবদ্ধতা আছে দুই দেশের। নিউ স্টার্ট ট্রিটি অনুযায়ী, দুই দেশ ১ হাজার ৫৫০ পরমাণু অস্ত্র আর বোমা রাখতে পারবে নিজ নিজ দেশে। চলতি বছরই এই চুক্তি থেকে সরে আসে রাশিয়া।
এরপর থেকে নিজেদের নতুন অস্ত্র সারমাট আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, বুরেভেস্তনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ নানা অস্ত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করে মস্কো। সেইসঙ্গে হুশিয়ারি দেয়, অস্ত্রের দৌড়ে রাশিয়ার সঙ্গে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার নিজেরও এতো পরমাণু অস্ত্র বহনের ক্ষমতা নেই। ইউক্রেনে সেনা অভিযান, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আর যুদ্ধের খরচ পরিচালনা করতে গিয়ে প্রভাব পড়েছে রুশ অর্থনীতিতে। হুমকির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তা কতটা বাস্তবায়ন করবে রাশিয়া, সে প্রশ্ন নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের।





