দীর্ঘ শুনানির পর মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্ত সাংবিধানিকভাবে বৈধ বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এতে সার্বভৌম অধিকার হারিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ এখন ইতিহাস।
সুপ্রিম কোর্ট বলছে, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অস্থায়ী ব্যবস্থা ছিল। জম্মু-কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভার নির্বাচন করার নির্দেশ দেয়। এদিকে, বিজেপির যুক্তি, জম্মু-কাশ্মীরের আইন-শৃঙ্খলা ও পর্যটনসহ আয়ের কথা মাথায় রেখে এ সিদ্ধান্ত জরুরি ছিল। বাসিন্দাদের বৈষম্য দূর করতে কেন্দ্র সরকার এই পদক্ষেপ নেয়।
আদালতের রায়ের পর রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহল থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, এই রায় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি। কংগ্রেস নেতা করণ সিং রায়কে স্বাগত জানিয়ে রাজ্যের মর্যাদা দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এই রায়ে তারা হতাশ এবং দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গুলহাম নবী আজাদ জানিয়েছেন, 'এই সিদ্ধান্ত জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে হতাশ করেছে। অনুচ্ছেদ ৩৭০ এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে যুক্ত ছিল।'
জম্মু ও কাশ্মীরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'এই রায় পুরো জাতির পরাজয়। সুপ্রিম কোর্ট আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৩৭০ ধারাকে অস্থায়ী বলে আদালত এই জাতিকে দুর্বল করেছে।'
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি। তিনি বলেন, 'আমরা অবশ্যই জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টকে রায়ের বৈধতা নিয়ে অবহিত করব। এই সিদ্ধান্তের ত্রুটি ও অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরা হবে।'
জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে আদালত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরকে। এই অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসবে কি না সেটি এখন বড় প্রশ্ন।